মাল্টায় কাজের ভিসায় যাওয়ার উপায় এবং খরচ কত জানুন

মাল্টায় কাজের ভিসায় যাওয়ার উপায় এবং খরচ কত জানুন

মাল্টায় কাজের ভিসায় যাওয়ার উপায় এবং খরচ কত জানুন

আসসালামুআলাইকুম আজকে আমরা কথা বলার চেষ্টা করবো মাল্টার কাজের ভিসা সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেলে যারা মালটা যেতে চাচ্ছেন তাদের কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। এর মধ্যে থাকছে কিভাবে আপনি মালটার কাজের ভিসা পাবেন, কিভাবে আবেদন করবেন, কোন কোন মাধ্যমে ভিসা পাওয়া সম্ভব, বাংলাদেশ থেকে মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে । তো আপনার যদি এ বিষয়গুলো জানার থাকে তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন আশা করছি উপকৃত হবেন।

মাল্টা যাওয়ার উপায়

আপনি যদি বর্তমানে মাল্টা তে কাজের ভিসায় যেতে চান তাহলে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় প্রকার মাধ্যমে যেতে পারবেন। সরকারিভাবে প্রতিবছর মাল্টা তে বেশ কিছু লোক নিয়োগ করা হয় আপনি চাইলে সেই সময় সরকারিভাবে সেখানে যেতে পারবেন। আগে বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ  মাল্টা যেতে চাইতো তাহলে ভিসা প্রসেসিং সহ অন্যান্য যে দূতাবাস সম্পর্কিত কাজ ছিল সেগুলোর জন্য ইন্ডিয়াতে যেতে হতো কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থিত ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে ভিসা সম্পর্কিত যাবতীয় যে প্রসেসিং গুলো রয়েছে সেগুলো করানো যাচ্ছে যার কারণে আর ইন্ডিয়াতে যেতে হচ্ছে না।


এখন আসি মাল্টা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে। আপনি যদি মালটাকে যেতে চান তাহলে মোটা দাগে তিন থেকে চারটি উপায়ে রয়েছে।

  • সরকারিভাবে

  • বেসরকারি কোন এজেন্সির মাধ্যমে

  • কোন আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত কারো মাধ্যমে

  • নিজে নিজে ভিসার আবেদন করে

বাংলাদেশ এবং মাল্টার সরকারের একটি শ্রমবাজার সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে সেখানে বাংলাদেশ থেকে কি পরিমাণ কর্মী কোন সময়ে এবং কোন কাজের জন্য নিয়োগ করা হবে সেটি দুটি দেশের সরকার মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এরপর প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশ সরকার মাল্টা তে বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে আপনি চাইলে কখন সরকারি ভাবে কাজের জন্য মাল্টা যেতে পারেন।


দ্বিতীয় যে উপায়টি রয়েছে সেটি হল বেসরকারি কোন এজেন্সির মাধ্যমে তার প্রসেসিং করিয়ে নেওয়া। বর্তমানে যারা কাজের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে তারা প্রায় সবাই এই মাধ্যমটি বেছে নিচ্ছে কারণ সরকারিভাবে ভিসার যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সে পরিমাণ ভিসা দেয়া হয় না যার কারণে বাধ্য হয়েই মানুষ বেসরকারি বিভিন্ন এজেন্সির শরণাপন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক বিশ্বস্ত এজেন্সি রয়েছে যারা অনেক বিশ্বস্ততার সাথে ভিসা প্রসেসিং করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর পরিমাণে মানুষ পাঠাচ্ছে আপনি চাইলে তাদের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করে মালটাতে যেতে পারবেন। 


তৃতীয় যে উপায়টি রয়েছে সেটি হল পরিচিত কোন মানুষ অথবা আত্মীয়-স্বজন যারা অলরেডি মালটাতে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাদের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করানো। আপনার যদি কোন আত্মীয় স্বজন মাল্টা তে থেকে থাকে তাহলে আপনি চাইলে তাদের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট বের করে নিজে নিজে ভিসার জন্য আবেদন করে খুব সহজেই সেখানে কাজের জন্য যেতে পারবেন। আপনি যদি একবার ওয়ার্ক পারমিট হাতে পেয়ে যান তাহলে সে ক্ষেত্রে ভিসা প্রসেসিং অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।


সর্বশেষ যে মাধ্যমটি রয়েছে সেটি হল নিজে নিজে মালটার যে বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে সেগুলোর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করে এরপরে ভিসা প্রসেসিং করানো। যেহেতু বর্তমানে কোম্পানিগুলো অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মী নিয়োগ করে থাকে তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিট বের করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনি যদি যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন তাহলে আপনাকে তারা ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করে দেবে এরপরে আপনি বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করিয়ে নিতে পারবেন।


এক্ষেত্রে আপনাকে সর্বপ্রথম মাল্টার ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করতে হবে এরপরে যখন সেটি হাতে পেয়ে যাবেন এরপরে ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইটে ঢুকে ভিসা আবেদন ফরমটি সংগ্রহ করে সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে এবং সাথে যে ডকুমেন্টগুলো চাওয়া হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে জমা দেয়ার মাধ্যমে দেশে আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন।

মাল্টার কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনি যখন মাল্টার কাজের ভিসার যখন আবেদন করতে যাবেন এখন আপনাকে নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো জমা দিতে হবে।

  • আপনি ভিএফএস গ্লোবাল থেকে যে যে ফরমটি সংগ্রহ করেছিলেন সেটি সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে

  • সদ্য তোলা রঙিন ছবি

  • আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যেটির মেয়াদ সর্বনিম্ন ছয় মাস থাকতে হবে

  • কোম্পানি থেকে দেয়া ওয়ার্ক পারমিট বা জব অফার লেটার

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা এন আইডি কার্ড

  • যদি কাজের দক্ষতা থাকে তাহলে সেটির সারটিফিকেট।

সাধারণত ওপরে বর্ণিত কাগজপত্র গুলাই দরকার হয় তবে বিশেষ ভিসার ক্ষেত্রে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।

মাল্টায় কাজের ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে

উপরের আলোচনাটুকু যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি বুঝতে পারছেন কিভাবে আপনি মাল্টার ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা পেতে পারেন। এবার আসা যাক কোন মাধ্যমে গেলে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে।


সরকারিভাবে মাল্টা যেতে চাইলে আপনার খরচ পড়বে আনুমানিক তিন থেকে চার লক্ষ টাকার মতো আর যদি বেসরকারি কোন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করেন তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ পড়বে ৯ লক্ষ টাকা থেকে শুরু ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আপনি যদি বেসরকারি কোন মাধ্যমে মাল্টা যেতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ প্রায় তিন থেকে চার গুণ বেশি লাগছে সরকারি মাধ্যমের চাইতে।


নিচে এক কথায় বিভিন্ন মাধ্যমে মাল্টা যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলোঃ

  • সরকারিভাবে গেলে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে

  • বেসরকারি কোন এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ হবে ৯ থেকে ১২ লক্ষ টাকা

  • পরিবার বা আত্মীয় স্বজনের রেফারেন্সে গেলে খরচ হবে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা

  • যদি আপনি নিজে নিজে ভিসা প্রসেসিং করান তাহলে সে ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা হবে

এবং আপনি যদি কোন দালালের মাধ্যমে মাল্টা যেতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে যেটি নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না সেই সাথে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url