লুক্সেমবার্গ এর বেতন কত এবং কি কি কাজের সুযোগ রয়েছে জানুন

লুক্সেমবার্গ এর বেতন ও কাজের সুযোগ

লুক্সেমবার্গ এর বেতন কত এবং কি কি কাজের সুযোগ রয়েছে জানুন

পৃথিবীর সবচাইতে ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত লুক্সেমবার্গ সম্পর্কে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। অনেকেই কাজের উদ্দেশ্যে এই দেশটিতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন এবং সেখানে গেলে কি পরিমান বেতন পাওয়া যাবে এবং যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে। আপনাদের এই প্রয়োজন মেটাতেই মূলত আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। আশা করছি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন তাহলে উল্লেখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা পাবেন।

লুক্সেমবার্গে কাজের সুযোগ

দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশটিতে কাজের সুযোগ চাহিদার তুলনায় অনেকটাই সীমিত। দেশটিতে সাধারণত হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট সেক্টরে বেশি পরিমাণে লোক নিয়োগ করা হয়। রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন কাজে পারদর্শী এমন লোকজনের জন্য সেখানে কাজের সুযোগ রয়েছে। এই সেক্টরের কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে রুম বয়, ওয়েটার, সেফ বা বাবুর্চি এ সমস্ত কাজগুলোতে দক্ষ তাদের জন্য বেশ ভালো পরিমাণে সুযোগ রয়েছে।

এগুলো করতে পারলে তাতে বেশ ভালো পরিমানে ইনকাম করতে পারবেন। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় এখানে এই সমস্ত কাজের বেতন বেশি দেয়া হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হল লুক্সেমবার্গে কাজের ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়? এক্ষেত্রে বড় অসুবিধা হল দেশটি তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশ থেকে কোন প্রকার শ্রমিক নিয়োগ করা হয় না অর্থাৎ আপনি চাইলেও বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কোন প্রকার লুক্সেমবার্গের ভিসা পাবেন না। তাহলে আপনি কিভাবে লুক্সেমবার্গে কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন? 

এক্ষেত্রে আপনাকে ইউরোপের অন্যান্য সেনজেনভক্ত যে দেশগুলো রয়েছে যেমন মালটা, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশগুলোর রেসিডেন্সিয়াল কার্ড থাকলে আপনি লুক্সেমবার্গে বসবাসের সুযোগ এবং কাজের অনুমতি পাবেন।

অনেকের প্রশ্ন থাকে লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশি কেউ কাজ করে কিনা উত্তর হল হ্যাঁ ওপরে বর্ণিত যে পদ্ধতি সেটির মাধ্যমে অর্থাৎ কারো যদি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত কোন দেশের রেসিডেন্সিয়াল কার্ড থাকে তাহলে সে অনায়াসে লুক্সেমবার্গে গিয়ে বসবাস এবং কাজ করতে পারবেন।

লুক্সেমবার্গের কাজের বেতন

লুক্সেমবার্গে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমনঃ বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্ট এবং আইটি সেক্টরের বেতন ভালো হয়ে থাকে। এছাড়াও যে সমস্ত জনপ্রিয় কাজগুলোর বেতন ভালো হয়ে থাকে তাহলে দেয়া হলোঃ

হোটেল বা রুম বয়

একজন হোটেল বা য রুম বয় এর বেতন ২০০০ ইউরো থেকে শুরু করে ২৫০০ ইউরো পর্যন্ত আয় করতে পারে যা বর্তমানে বাংলাদেশের টাকায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ওয়েটার

একজন ওয়েটারের ক্ষেত্রেও বেতন সাধারণত বাংলাদেশি টাকায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে 2 লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ওয়েটারের বেতন তার কাজ এবং অন্যান্য বিষয়ের উপরে নির্ভর করে কম বা বেশি হতে পারে। তবে আপনারা এই পরিমাণ বেতন স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নিতে পারেন।

সেফ বা বাবুর্চি

বিভিন্ন হোটেল বা রেস্টুরেন্টের সেফ হিসেবে যদি আপনি কাজ করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার বেতন হবে ২৫০০ থেকে শুরু করে ৩৫০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে যেটি বাংলাদেশি টাকায় ২ লাখ ৮০ হাজার থেকে শুরু করে ৪ লাখ টাকা হয়।

সফটওয়্যার ডেভেলপার

সারা পৃথিবীব্যাপী সর্বোচ্চ বেতনের কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথম আইটি সেক্টরের নামটি সামনে আসবে। ঠিক তেমনি লোক মেম্বার কেউ এর ব্যতিক্রম নয় সর্বোচ্চ বেতনধারীদের মধ্যে সফটওয়্যার ডেভলপার অন্যতম। লুক্সেমবার্গে একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার এর মাসিক বেতন ৪০০০ থেকে ৫৫০০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে যেটি বর্তমানে বাংলাদেশের টাকায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার থেকে শুরু করে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আইটি কনসালটেন্ট

আইটি কনসালটেন্ট এর বেতন প্রতি মাসে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার ইউরো হয়ে থাকে যা বর্তমানে বাংলাদেশী টাকায় ৫ লাখ ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ক্লিনার বা হাউজকিপার

একজন হাউসকিপারের বেতন সাধারণত বর্তমানে বাংলাদেশে টাকায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সেলম্যান বা সার্ভিস

এক্ষেত্রে বেতন সাধারণত ২ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

নির্মাণ শ্রমিক

একজন নির্মাণ শ্রমিকের বেতন ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

প্লাম্বার

একজন প্লাম্বার এর বেতন বাংলাদেশে্র ঢাকায় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

শেষ কথা

দেশটি তে বেতনের পাশাপাশি জীবনযাত্রা খরচ অনেক বেশি। আমরা অনেক সময় দেখি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি লুক্সেমবার্গ এর ভিসা সহ আরো অন্যান্য লোভনীয় সব অফার দেয়া হয়ে থাকে যেগুলো প্রতারক চক্রদের একটি অনেক বড় ফাঁদ। একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন লুক্সেমবার্গ এর ভিসা কখনোই বাংলাদেশ থেকে সরাসরি হবে না। এই ব্যাপার গুলো সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন থাকবেন এবং আপনার কষ্টের টাকা প্রতারকের হাতে দিয়ে প্রতারিত হবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url