জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে এ টু জেড তথ্য

জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে এ টু জেড তথ্য

জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে এ টু জেড তথ্য

আমরা অনেকেই একটি ভালো ভবিষ্যতের আশায় ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে যেতে চাই. আপনাদের এই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য যে সমস্ত তথ্য জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানা দরকার সেগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা করা হয়েছে আর্টিকেলটিতে। বর্তমানে জার্মানিতে শ্রমিক সংকটের কারণে দেশটির সরকার প্রচুর পরিমাণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করছে। জার্মানির কাজের ভিসা কিভাবে পাবেন, ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন, কি কি কাজ করতে পারবেন, কি কি যোগ্যতা এবং কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সে সম্পর্কে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি।

জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা

জার্মানিতে আপনি যে কোন কাজের জন্য যদি যেতে চান তাহলে অবশ্যই প্রথমত আপনাকে জার্মান ভাষা শিখতে হবে এবং দ্বিতীয়তঃ ইংরেজি ভাষার উপরেও মোটামুটি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। জার্মানিতে গিয়ে কাজ করা এবং মানুষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ভাষাগত দক্ষতা থাকা সবচাইতে বেশি প্রয়োজন তাছাড়া আপনি আপনার কাজ সঠিকভাবে যেমন করতে পারবেন না তেমনি মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে না পারার কারণে বেশ ভালো রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই আপনি যদি চিন্তা করে থাকেন জার্মানিতে কাজের জন্য যাবেন তাহলে অবশ্যই আপনার অন্তত জার্মানির ভিসাটা সেখানে নেয়া উচিত।

দ্বিতীয়তঃ আপনি যে কাজের জন্য জার্মানিতে যেতে চাচ্ছেন সেই কাজের উপরে আপনার ন্যূনতম কিছু দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। এবং আপনি যে আসলেই এই কাজের দক্ষ সেটি প্রমাণ করার জন্য কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। আর যদি আপনি কোন কাজে দক্ষ না হন তাহলে সেক্ষেত্রে নন স্কিলড বা কোন রকমের দক্ষতা প্রয়োজন হয় না এমন ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি একজন দক্ষ শ্রমিক হন তাহলে আপনার বেতন একজন অদক্ষ শ্রমিকের চাইতে অনেকটাই বেশি হবে।

এরপরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল জার্মানিতে আপনি যে কোন ভিসার জন্য আবেদন করার আগে অবশ্যই আপনার নিয়োগকর্তার থেকে একটি অফার লেটার প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ আপনি জার্মানিতে যে কোম্পানিতে বা যার আন্ডারে কাজ করার জন্য যাবেন তার থেকে আপনাকে একটি অফার লেটার ম্যানেজ করতে হবে তাছাড়া আপনি কখনোই জার্মানির কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট বা অফার লেটার পাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। যেহেতু বর্তমানে প্রত্যেকটি দেশের কোম্পানিগুলো তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনলাইনে প্রকাশ করে থাকে আপনি চাইলে সেই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে এর পরে যদি সিলেক্টেড হন তাহলে অফার লেটার পেতে পারেন। তাছাড়া আপনি যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার সমস্ত কার্যক্রম তারাই সম্পন্ন করে দেবে। এছাড়া যদি আপনার জার্মানিতে পরিচিত কেউ থাকে তাহলে সে চাইলে আপনার হয়ে অফার লেটার যে কোন কোম্পানি থেকে ম্যানেজ করে দিতে পারেন। মূলত এই তিনটি উপায়ে আপনাকে জার্মানির কাজের জন্য অফার লেটার ম্যানেজ করতে হবে।

জার্মানির কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জার্মানির ভিসা আবেদনের জন্য সর্বপ্রথম আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং সেটির মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস বা তার বেশি থাকতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ডের কয়েক কপি ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের কয়েক কপি রিসেন্ট তোলা ছবি। বিভিন্ন কাজের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান স্টাইলে সিভি এবং কভার লেটার থাকতে হবে। করোনার টিকার সার্টিফিকেট এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং সর্বশেষ এক বছরের জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হতে পারে।

জার্মানি তে যেসকল কাজের ভিসা রয়েছে

বর্তমানে জার্মানিতে অনেক প্রকারের কাজের সুযোগ রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাজের নাম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • ইঞ্জিনিয়ার
  • ইলেকট্রিশিয়ান
  • ড্রাইভার
  • কৃষি শ্রমিক
  • হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এ কাজ
  • ক্লিনার
  • নার্স
  • ডাক্তার
  • টিচার
  • নির্মাণ শ্রমিক
  • অন্যান্য সাধারণ শ্রমিক ইত্যাদি
উপরের কাজগুলো ছাড়াও আরো অনেক কাজের সার্কুলার জার্মানির সরকারি যে জব সার্চ ওয়েবসাইট আছে সেখানে পাবলিশ করা হয় সেখান থেকে আপনারা চাইলে বিভিন্ন কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ওয়েবসাইটের লিঙ্ক হলো www.makeitingermany.com আপনারা এই ওয়েব সাইটে ঢুকে আপনাদের যোগ্যতা এবং পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন জব খুজে সেটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরপরে আপনারা যদি তাদের কাছে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন তাহলে সে ক্ষেত্রে তারা আপনাকে অফার লেটার পাঠাবে এবং এর পরে আপনি ভিসার প্রসেসিং করে খুব সহজেই জার্মানির কাজের ভিসা পেয়ে যেতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য সেটি হল কাজের জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ইউরোপিয়ান স্টাইলে একটি সিভি এবং কভার লেটার প্রস্তুত করে নিতে হবে এরপরে যখন আবেদন করবেন তখন সেই কোম্পানি বরাবর ইমেইলের মাধ্যমে এই ডকুমেন্ট গুলো দিয়ে আবেদন করতে হবে। আপনারা যদি নিজে সিভি এবং কভার লেটার বানাতে না পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে অন্য কারো সাহায্য নিতে পারেন অথবা ইউটিউব বা গুগলে গিয়ে সার্চ করে ভিডিও দেখে সে অনুযায়ী সিভি এবং কভার লেটার বানিয়ে নিতে পারেন।

শেষ কথা

আশা করি বুঝতে পেরেছেন বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জার্মানিতে যাওয়ার প্রসেস টা কি এবং কিভাবে আবেদন করতে হয়। এছাড়াও যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি এটাও জানতে পেরেছেন যে কিভাবে আপনি যে কোন কাজের জন্য আবেদন করবেন এবং কোন কাজের জন্য জার্মানিতে যেতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url