কম তেলে বেশি চলে কোন মোটর সাইকেল
কম তেলে বেশি চলে কোন মোটর সাইকেল
বর্তমানে বাইরে চলাফেরার ক্ষেত্রে একটি মোটরসাইকেল এর প্রয়োজনীয়তা সবসময়ই লক্ষ্য করা যায়। বাজারে তো অনেক ধরনের মোটরসাইকেল রয়েছে এর মধ্যে থেকে কোন মোটরসাইকেলটি নিলে কম তেলে আপনি বেশি রাস্তা অতিক্রম করতে পারবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতেই লেখা হয়েছে আজকের আর্টিকেলটি। আজকে আপনাদেরকে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায় কম তেলে বেশি চলে এমন কয়েকটি বাইকের নাম এবং কোনটা কত কিলোমিটার চলে এক লিটার তেলে সেটি জানাবো।
হিরো স্প্লেন্ডার প্লাস (১০০ সিসি)
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে প্রচলিত মোটরসাইকেল গুলার মধ্যে সবচাইতে বেশি বিক্রিত এবং জনপ্রিয় যে মোটরসাইকেলটি সেটি হল হিরো স্প্লেন্ডার প্লাস। এই বাইকটিতে রয়েছে ৯৭ সিসির একটি ইঞ্জিন এবং এটি থেকে আপনি অনায়াসে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এক লিটার তেলে চালাতে পারবেন। এটির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম এবং মাইলেজ বেশি দেয়ার কারণে দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশের মার্কেট দখল করে আছে।
হোন্ডা ড্রিম নিও (১১০ সিসি)
আপনারা যারা শহরের মধ্যে বাইক চালান তাদের জন্য উপযুক্ত একটি বাইক হল হোন্ডা ড্রিম নিও। এটি সিটি রাইডের জন্য অনেকটাই আরামদায়ক হওয়ার কারণে যারা শহরের মধ্যে অফিসে যাতায়াতের জন্য বাইক কিনতে চান তাদের জন্য অনেক উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বাইকটিতে রয়েছে ১০৯ সিসির একটি ইঞ্জিন যেটি থেকে আপনি অনায়াসে ৭৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার চালাতে পারবেন ১ লিটার তেলে। বেশি মাইলেজ এবং নির্ভরযোগ্য একটি বাইক হিসেবে এটি বাংলাদেশের মার্কেটে প্রচলিত রয়েছে।
বাজাজ প্লাটিনা (১০০ সিসি)
আপনারা যারা ছোটখাটো সিটি রাইট এর পাশাপাশি অথবা অফিসে যাতায়াতের জন্য ব্যবহারের বাইরেও লং রাইড এর জন্য একটি বাইক খুঁজছেন যেটি মাইলেজ অনেক ভালো দেবে এবং লং রাইড এর জন্য উপযুক্ত তাদের জন্য বাজাজ প্লাটিনা ১০০ একটি উপযুক্ত বাইক হতে পারে। এই বাইকটিতে রয়েছে ১০২ সিসির একটি ইঞ্জিন যেটি থেকে আপনি অনায়াসে সর্বনিম্ন ৭৫ কিলোমিটার থেকে ৯০ কিলোমিটার মাইলেজ পাবেন। মূলত বাইকটির এ সমস্ত গুণের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে এই সিরিজের সবচাইতে বেশি বিকৃত বাইক গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে অবস্থান করে আসছে।
টিভিএস মেট্রো প্লাস (১১০ সিসি)
যারা অফিসিয়াল কাজে একটি বাইক কেনেন তাদের মধ্যে ম্যাক্সিমামই টিভিএস মেট্রো প্লাস কিনে থাকেন কারণ এই বাইকটি পারফরম্যান্সের দিক দিয়েও যেমনি সেরা তেমনি মাইলেজের দিক দিয়েও সেরা। দাম অনুযায়ী যদি আপনি এই বাইকের পারফরমেন্সের তুলনা করেন তাহলে অবশ্যই এক কথায় বলা যায় এটি পয়সা উসুল একটি বাইক। এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০৯ সিসির একটি ইঞ্জিন যেটি থেকে আপনি ১ লিটার তেলে ৭০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পেয়ে যাবেন।
সুজুকি হায়াতি ইপি (১১০ সিসি)
আপনি যদি একই সাথে সাশ্রয়ী, নরমাল রাইড এর জন্য ভালো এবং ভালো কন্ট্রোলিং রয়েছে এমন বাইক চান তাহলে আপনার জন্য একটি ভালো অপশন হতে পারে সুজুকি হায়াতি ইপি। ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং অন্যান্য যে সমস্ত দিক বিবেচনা করে একটি ভালো বাইক নির্বাচন করা যায় সেগুলোর সবদিক বিবেচনায় এই বাইকটি আপনার জন্য এই সেগমেন্টে উপযুক্ত হতে পারে। এ বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১১২ সিসির একটি ইঞ্জিন যেতে থেকে আপনি একটি ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি ১ লিটার তেলে ৭৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার মাইলেজ পেয়ে যাবেন।
ইয়ামাহা স্যালুটো আর এক্স (১১০ সিসি)
একই সাথে হাইওয়ে এবং সিটি রাইড এর জন্য ভালো মাইলেজ দেয় এমন বাইকের তালিকায় অবশ্যই শুরু থেকেই থাকবে ইয়ামাহা স্যালুটো আরএক্স। আমরা বর্তমানে ইয়ামাহার বাইকগুলোকে ভালো কন্ট্রোলিং এবং স্মুথ পারফরমেন্সের জন্য চিনে থাকি। yamaha এই বাইকটিতে ব্যবহার করেছে ১১০ সিসির একটি পাওয়ার ফুল ইঞ্জিন যেটি আপনাকে একটি আরামদায়ক রাইডিং ফিল দেবে। এই বাইকটি থেকে আপনি অনায়াসে ৭৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার মাইলেজ পেয়ে যাবেন।
বাজাজ সিটি ১০০ (১০০ সিসি)
বাজাজের যে বাইকগুলো সবচাইতে বেশি মার্কেটে বিক্রি হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বাজাজ সিটি হান্ড্রেড। বাংলাদেশের সবচাইতে উচ্চ মাইলেজ,পারফরমেন্স এবং দামের দিক বিবেচনায় এটি অন্যতম একটি বাইক। রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম এবং কম দামে একটি ভালো বাইক কিনতে চাইলে আপনার জন্য বাজাজ সিটি হান্ড্রেড অবশ্যই উপযুক্ত একটি বাইক হবে। এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৯৯ সিসির একটি ইঞ্জিন যেটি থেকে আপনি ৮৫ কিলোমিটার থেকে ৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পাবেন 1 লিটার তেলে।
হোন্ডা লিভো (১১০ সিসি)
সেই প্রাচীন যুগ থেকে জাপানি বাইকগুলোকে আমরা দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং ভালো পারফরম্যান্সের জন্য চিনে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় কমিউটার সেগমেন্টে হন্ডা বেশ কয়েকটি বাইক লঞ্চ করেছে যেটির মধ্যে হোন্ডা লিভো ১১০ সিসি অন্যতম। এই বাইকটিতে একই সাথে আপনি বাজেটের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় ডিজাইন, ভালো পারফরম্যান্স এবং ভালো মাইলেজ পেয়ে যাবেন। এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০৯ সিসির একটি ইঞ্জিন যেটি আপনাকে অনেক ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি ১ লিটার তেলে ৭৪ থেকে ৭৮ কিলোমিটার মাইলেজ দেবে।
শেষ কথা
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে প্রচলিত যে সমস্ত বাইকগুলো ভালো মাইলেজ দিয়ে থাকে সেগুলোর তালিকা উপরে দেয়া হয়েছে। তবে এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় সেটি হল নতুন অবস্থায় একটি বাইক যে পরিমাণ মাইলেজ দেবে সময়ের সাথে সাথে সেটি কিন্তু কমে যেতে শুরু করবে যদি না আপনি বাইকটির যথাযথ যত্ন না করেন। কিছু ছোটখাটো কাজ রয়েছে যেমন তেলের ফিল্টার পরিবর্তন করা, ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করা এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তেলের ট্যাঙ্কি পরিষ্কার করা এই সমস্ত কাজগুলো অবশ্যই আপনার নিয়মিত করা উচিত তা না হলে আপনি যত ভালো মাইলেজ এর বাইরে কেনেন না কেন একটা সময় গিয়ে সেটার মাইলেজ ড্রপ করবে এবং আপনি আশানুরূপ মাইলেজ বা পারফরম্যান্স কোনটাই পাবেন না।
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url