অভ্র কিবোর্ড যুক্তবর্ণ লেখার নিয়ম

তিন বর্ণের যুক্তবর্ণ

অভ্র কিবোর্ড যুক্তবর্ণ লেখার নিয়ম

বর্তমানে আমরা মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারে বাংলা লেখালেখির ক্ষেত্রে অভ্র কিবোর্ড সবচাইতে বেশি ব্যবহার করে থাকি। এটি ব্যবহারের বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে বড় কারণ হচ্ছে খুব সহজেই এবং দ্রুততার সাথে আপনি এখানে বাংলা টাইপিং করতে পারবেন যেটি অন্যান্য কিবোর্ড এ সময় সাপেক্ষ এবং জটিলও বটে। তবে টাইপিং এর ক্ষেত্রে আমাদের সবচাইতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় যুক্তবর্ণ টাইপিং এর সময়। আপনাদের এই সমস্যার সমাধানের জন্যই মূলত আজকের আর্টিকেলটি লেখা। আজকে আমরা আলোচনা করব কিভাবে আপনি খুব সহজেই বিভিন্ন যুক্তবর্ণ টাইপ করতে পারবেন এবং কিছু কিবোর্ড শর্টকাট দেখাবো যেগুলো ব্যবহার করলে আপনার লেখালেখির সময় বাঁচবে।

হসন্ত (্) লেখার উপায় ও ব্যবহার

সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তবর্ণ যেগুলো রয়েছে তার মধ্যে হসন্ত (্) অন্যতম কারণ এটি ম্যাক্সিমাম যুক্ত বর্ণের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয়। আপনি একটি বর্ণের সাথে হসন্ত (্) যুক্ত করে সহজেই অন্য বর্ণে রূপান্তরিত করতে পারবেন। এদিকে মূলত দুই বা তার বেশি বর্নকে একত্রিত যুক্ত করে একটি যুক্তবর্ণ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। অভ্র কিবোর্ডে আপনি হসন্ত (্) টাইপ করতে চাইলে আপনাকে Shift + ব ব্যবহার করতে হবে। আপনি যখন দুটি বর্ণ একত্রিত করে যুক্তবর্ণ করতে যাবেন তখন প্রথম বর্ণের সাথে হসন্ত (্) দিয়ে পরবর্তী বর্ণ টাইপ করলেই সেটি যুক্তবর্ণ হয়ে যাবে।

উদাহরণঃ
  • ক্ক: প্রথমে ক, তারপর Shift + ব, এরপর আবার ক লিখলে হবে ক্ক।
  • ক্ত: প্রথমে ক লিখুন, তারপর Shift + ব, এবং শেষে ত লিখুন = ক্ত।
  • স্ক: স লিখুন, তারপর Shift + ব, এবং ক লিখুন = স্ক।

রেফ (র যুক্ত বর্ণ) ব্যবহার ও লেখার নিয়ম

আপনি যদি এমন কোন বর্ণ লিখতে চান যেগুলোর উপরে রেফ অথবা র যুক্ত থাকে তখন হসন্তের প্রয়োজন হবে না। কেবলমাত্র রেফ যুক্ত বর্ণের জন্য Shift + র ব্যবহার করতে হবে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার হবেন।

উদাহরণঃ

  • ক্র লেখার ক্ষেত্রে: ক লিখুন, তারপর Shift + র চাপুন = ক্র।
  • ত্র লেখার ক্ষেত্রে : ত লিখুন, তারপর Shift + র চাপুন = ত্র।
  • গ্র লেখার ক্ষেত্রে: গ লিখুন, তারপর Shift + র চাপুন = গ্র।

তিন বর্ণের যুক্তবর্ণ (স্ক্র, ষ্ট্র, ক্ত্র)

লেখার ক্ষেত্রে অনেক সময় আমাদের একই সাথে তিনটি বর্ণের সংমিশ্রণে তৈরি যুক্তবর্ণ ব্যবহার করতে হয়। এই যুক্তবর্ণগুলো সাধারণত সরাসরি কোন কিবোর্ড এর সাহায্যে লেখা যায় না এর জন্য আপনাকে বিশেষভাবে হসন্ত ব্যবহার করতে হবে যেমনঃ যেমন "ত্র", "ক্ষ", "জ্ঞ" ইত্যাদি।

উদাহরণঃ
  • ত্র: প্রথমে ত লিখুন, তারপর Shift + র চাপুন = ত্র।
  • ক্ষ: শুরুতে kkho টাইপ করুন = ক্ষ।
  • জ্ঞ: প্রথমে জ লিখুন, তারপর Shift + ব, এবং ঞ লিখুন = জ্ঞ।

বেশি ব্যবহার করা কিছু জটিল যুক্তবর্ণের নিয়ম

আপনাদের সুবিধার্থে বেশি ব্যবহৃত কিছু জটিল যুক্ত বর্ণের উদাহরণ কি বোর্ড শটকাট সহ নিচে দেয়া হলঃ
  • ঞ্চ: ন + Shift + ব + চ = ঞ্চ
  • ঞ্জ: ন + Shift + ব + জ = ঞ্জ
  • ঙ্‌গ: ঙ + Shift + ব + গ = ঙ্‌গ
  • শ্চ: শ + Shift + ব + চ = শ্চ
  • শ্ন: শ + Shift + ব + ন = শ্ন
  • ন্ত: ন + Shift + ব + ত = ন্ত
  • ন্ধ: ন + Shift + ব + ধ = ন্ধ
  • ম্প: ম + Shift + ব + প = ম্প
  • ম্ভ: ম + Shift + ব + ভ = ম্ভ
  • চ্চ: চ + Shift + ব + চ = চ্চ
  • ষ্ট: ষ + Shift + ব + ট = ষ্ট
  • ট্র: ট + Shift + র = ট্র

ওপরে বেশ কয়েকটি জটিল যুক্তবর্ণ উদাহরণসহ লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এগুলো অনুসরণ করলে আশা করছি আপনি খুব সহজেই অভ্র কিবোর্ড এর মাধ্যমে যেকোনো যুক্তবর্ণ লিখতে পারবেন। সাধারণভাবে আমরা যে সমস্ত ওয়ার্ড লিখি সেগুলোর জন্য উপরে যুক্তবর্ণ গুলোই যথেষ্ট। এগুলো দেখে দেখে আসতে আসতে প্র্যাকটিস করবেন এরপরে একটা সময় গিয়ে আপনাকে আর এগুলো দেখতে হবে না নিজে নিজেই টাইপ করতে পারবেন।

কোন কোন ক্ষেত্রে অভ্র কিবোর্ডে যুক্তবর্ণ লেখার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনি সেটিংস অপশনে গিয়ে ফনিক্স মোড অন করতে পারেন এক্ষেত্রে ইংরেজি অক্ষরে টাইপ করলে সেগুলো অটোমেটিক্যালি যুক্তবর্ণে কনভার্ট হয়ে যাবে। যেমন আপনি যদি ক্ষ লিখতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে kkh টাইপ করবেন তাহলে অটোমেটিক্যালি সেটি ক্ষ তে কনভার্ট হয়ে যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url