পর্তুগালে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ১০ টি ভিস

পর্তুগালে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ১০ টি ভিসা

পর্তুগালে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ১০ টি ভিসা

আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজকে আমরা কথা বলব ইউরোপের সবচাইতে ওভার হাইপড একটি দেশ পর্তুগাল নিয়ে। আপনারা হয়তো জানেন পর্তুগালে টুরিস্ট ভিসা বা অন্য কোন শর্ট টাইম ভিসা নিয়ে গিয়ে অথবা বৈধ বা অবৈধ ভাবে পর্তুগালে গিয়ে ট্যাক্স দেয়ার মাধ্যমে সেখানে লিগ্যাল হওয়া যেত কিন্তু কিছুদিন আগে এই নিয়মটি বাতিল করা হয়েছে।

গত জুন মাসে এই নিয়মটি বাতিল হওয়ার পর যারা নতুন করে পর্তুগালে যাওয়ার চিন্তা করছিলেন তাদের মধ্যে সবচাইতে বেশি যে প্রশ্নটি জেগেছে সেটি হল তাহলে কি নতুনদের জন্য পর্তুগালের দরজা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেল? আজকের আর্টিকেলটি মূলত তাদের জন্যই যারা নতুন করে পর্তুগালে যাওয়ার চিন্তা করছেন। শুরুতেই বলে রাখি এই নিয়মটি বাতিল হলেও কিন্তু বর্তমানে অন্যান্য অনেকগুলো ভিসা নিয়ে পর্তুগালে নতুন করে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেই বিস্তারিত থাকছে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশটিতে।

বর্তমানে পর্তুগালের কোন ভিসা গুলা ওপেন রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করছি আপনি সেগুলো বিবেচনা করে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে পর্তুগালের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

ডি-১ ভিসা

সর্বপ্রথম পর্তুগালের ভিসা অপশন গুলোর মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় হচ্ছে ডি-১ ভিসা। এই ভিসাটি সাধারণত আমাদের কাছে সিজনাল ভিসা হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে যারা পর্তুগালে কৃষি কাজের জন্য অথবা কনস্ট্রাকশন রিলেটেড বিভিন্ন কাজের জন্য পর্তুগালে যেতে চান তাদের জন্য এই ভিসাটি প্রযোজ্য। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই ভিসা টি ইস্যু করা হয় তখন প্রচুর পরিমাণে জনবল নিয়োগ করা হয়। তো আপনারা যারা শর্ট টার্ম কোন কাজের জন্য পর্তুগালে যেতে চান তারা চাইলে এই ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে পর্তুগালে যেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে একটা জিনিস মাথায় রাখবেন এই ভিসার মেয়াদ এক বছরের কম হয়ে থাকে। 

ডি-২ ভিসা

আপনারা যারা পর্তুগালে গিয়ে কোন ব্যবসা শুরু করতে চান তাদের জন্য প্রযোজ্য ভিসা হচ্ছে ডি-২ ভিসা। পর্তুগালে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসায়ের প্রচুর পরিমাণে সুযোগ রয়েছে তাই আপনি যদি চান তাহলে অনায়াসেই বাংলাদেশ থেকে ডি-২ ভিসার মাধ্যমে পর্তুগালে গিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন। এই ভিসাটি অনেকের কাছে উদ্যোক্তা ভিসা নামে পরিচিত। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে আরও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য পর্তুগালের সরকার স্টার্টআপ যে ছোটখাটো বিজনেস গুলো আছে সেগুলোর দিকে অধিক মনোযোগ দিচ্ছে যার কারণে সেখানে প্রচুর পরিমাণে ডি-২ ভিসা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

ডি- ৩ ভিসা

আপনি যদি বাংলাদেশে কোন একটি সেক্টরে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে থাকেন তাহলে এই ভিসাটি আপনার জন্য প্রযোজ্য। ডি- ৩ ভিসা মূলত হাই স্কিল্ড বা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন যে সব পেশাজীবী রয়েছেন তাদের জন্যই ইস্যু করা হয়। যারা দীর্ঘদিন যাবত কোন একটি সেক্টরে কাজ করে থাকেন সেটি যেকোনো কিছু হতে পারে তাহলে আপনি একই কাজ পর্তুগালে গিয়েও করতে পারবেন ডি- ৩ ভিসার মাধ্যমে। এজন্য আপনার কাজের দক্ষতার প্রমাণপত্র হিসেবে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হতে পারে।

ডি- ৪ ভিসা

তরুণ প্রজন্মের সবচাইতে জনপ্রিয় ভিসা হিসেবে পরিচিত হলো ডি- ৪ ভিসা, কারণ এটি মূলত ছাত্রদের জন্য ইস্যু করা হয়। আপনারা যারা স্টুডেন্ট হিসেবে পর্তুগালে গিয়ে পড়াশোনা শেষ করে সেখানে সেটেল হতে চান তাদের ক্ষেত্রে এই ভিসা টি সবচাইতে উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। আপনি উচ্চ শিক্ষার জন্য পর্তুগালে যাওয়ার পর যখন আপনার পড়াশোনা শেষ হবে তখন খুব সহজেই আপনি সেখানে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দুই থেকে তিন বছর থাকার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। অনার্স বা মাস্টার্স সহ যেকোনো প্রকার ডিগ্রীর জন্যই আপনি এই ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে পর্তুগালে যেতে পারবেন।

ডি-৬ ভিসা

আপনারা যারা অলরেডি পর্তুগালে বসবাস করছেন স্থায়ীভাবে তারা চাইলে আপনাদের ফ্যামিলি মেম্বারদের ডি-৬ ভিসার মাধ্যমে এখানে নিয়ে আসতে পারবেন। যারা এইভাবে পর্তুগালে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন তাদের সবচাইতে বড় চিন্তার বিষয় থাকে কিভাবে নিজের ফ্যামিলি মেম্বারদেরকে সেখানে নিয়ে যাওয়া যায়। খুশির খবর হলো আপনি চাইলে আপনার যে কোন ফ্যামিলি মেম্বারকে খুব সহজেই ডি-৬ ভিসার ভিসার মাধ্যমে পর্তুগালে নিয়ে যেতে পারবেন।

ডি-৭ ভিসা

ডি-৭ ভিসা সবচাইতে ইন্টারেস্টিং ভিসা হিসেবে পরিচিত। যারা বাংলাদেশ চাকরি রত অবস্থায় রিটায়ার্ড করেছেন অথবা যে কোন পেশা থেকে রিটায়ার করেছেন আপনাদের যদি আর্থিক সামর্থ্য থাকে তাহলে জীবনের বাকিটা সময় চাইলে আপনি পর্তুগালে গিয়ে কাটাতে পারবেন এই ডি-৭ ভিসার মাধ্যমে। অর্থাৎ আপনার যদি পর্তুগালে গিয়ে দৈনন্দিন যে খরচ গুলো রয়েছে সেগুলো বহন করার সক্ষমতা থাকে তাহলে আপনি চাইলে পর্তুগালে গিয়ে অবসর সময় কাটাতে পারবেন।

ডি-৮ ভিসা

তরুণ প্রজন্মের জন্য আরো একটি উপযুক্ত ভিসা হলো ডি-৮ ভিসা। আপনারা যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন তারা চাইলে এই ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে পর্তুগালে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। তবে এখানে একটি শর্ত রয়েছে যেটি হলো আপনাকে প্রতি মাসে ন্যূনতম ৩৫০০ ডলার ইনকাম করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি যারা অন্যান্য পার্ট টাইম বা রিমোট জব করতে চান তাদের ক্ষেত্রেও এই ভিষা টি প্রযোজ্য।

ডি-৯ ভিসা

পর্তুগালে বিভিন্ন সময়ে অনেক বড় বড় ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট যেমন ফুটবলের ইন্টারন্যাশনাল কোনো টুর্নামেন্ট অথবা যেকোনো ধরনের মেলায় যদি আপনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যেতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি ডি-৯ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যাওয়ার পর আপনি যদি চান তাহলে স্থায়ীভাবে পর্তুগালে বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবেন তবে সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো আপনাকে জেনে নিতে হবে।

জব সার্চ ভিসা

এই পর্যন্ত যতগুলো ভিসার কথা বলেছি তার মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় এবং সবচাইতে বেশি আবেদন করা ভিসা হলো জব সার্চ ভিসা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে অভিবাসন প্রত্যাশীরা জব সার্চিং ভিসায় পর্তুগালে গিয়েছেন। আপনারা যারা বিভিন্ন কাজ খোঁজার জন্য পর্তুগালে যেতে চান তাদের ক্ষেত্রে এই ভিসা প্রযোজ্য হবে এক্ষেত্রে আপনাকে পর্তুগালে যাওয়ার পর একটি জব খুঁজে বের করতে হবে যার মাধ্যমে আপনি পরবর্তীতে সেখানে থাকার এবং কাজের অনুমতি পাবেন। এই ভিষার ক্ষেত্রে আপনাকে আগে থেকে কোন কাজ খুঁজে তারপরে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই আপনি পর্তুগালে যাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ খুঁজে নেয়ার সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে তিন মাস বা ছয় মাস পর্যন্ত সময় দেয়া হবে কাজ খোঁজার জন্য। 

শেষ কথা

বর্তমানে পর্তুগালে অবৈধভাবে প্রবেশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে উপরে বর্ণিত এই বিষয়গুলোর মাধ্যমে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়েছে যার কারণে দেখা যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে মানুষ এ সমস্ত ভিষা নিয়ে পর্তুগালে যাচ্ছে। উপরের দশটি ভিসার মধ্যে আপনার জন্য যেটি উপযুক্ত সেটি বিবেচনা করে এরপরে বৈধ উপায় পর্তুগালে যাওয়ার চেষ্টা করবেন সেটাই আপনার জন্য ভালো হবে। সংক্ষিপ্তভাবে মূলত কত প্রকার ভিসা নিয়ে বর্তমানে পর্তুগালে যাওয়া যাচ্ছে সে সম্পর্কে ছিল আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরবর্তীতে এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলাদা আলাদা আর্টিকেল পাবলিশ করা হবে সেগুলো পড়তে নজর রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url