নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং বেতন

নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং বেতন

নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং বেতন

আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজকে আমরা কথা বলবো নরওয়ের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে। নরওয়ের ভিসা পেতে হলে আপনার কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, কত টাকা খরচ হবে এবং ভিসা প্রসেসিং হতে কত দিন সময় লাগবে, কত টাকা বেতন পাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এছাড়াও বর্তমানে নরওয়েতে চাহিদা সম্পন্ন যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় নরওয়ে যেতে চান তাহলে আপনার যে তথ্যগুলো জানা দরকার আশা করি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে সে সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন।

নরওয়ে কেমন দেশ?

নরওয়ে পৃথিবীর মধ্যে একটি অন্যতম সুন্দর এবং উন্নত দেশ। আর্থিক অবস্থা এবং সামাজিক নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় ইউরোপের মধ্যে শান্তিপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে নরওয়ের নাম থাকবে প্রথম সারিতেই। সামাজিক নিরাপত্তার পাশাপাশি সেখানকার পেশাজীবী মানুষের বেতনের পাশাপাশি বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়। এছাড়া কাজের পরিবেশ এবং শর্তের কথা চিন্তা করলেও দেখা যায় এখানে শ্রমিক-কর্মী বান্ধব কাজের পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে।

নরওয়ের ভিসা পেতে হলে আপনাকে দেশের বাইরে কোথাও যেতে হবে না বাংলাদেশ থেকেই সম্পূর্ণ প্রসেসিং করিয়ে নিতে পারবেন। নরওয়ের যে কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিট হাতে পাওয়ার পর বাংলাদেশে অবস্থিত ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ যাবতীয় প্রসেসিং করিয়ে খুব সহজেই ভিসা হাতে পেতে পারেন। এরপরে দূতাবাস থেকে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে কখন ইন্টারভিউ দিতে হবে।

নরওয়ের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা

তবে নরওয়ের ভিসার জন্য ইন্টারভিউ সাধারণত ইংরেজিতে দিতে হয় তাই ইংরেজি ভাষায় মোটামুটি দক্ষতা অর্জন করার প্রয়োজন রয়েছে। অন্তত ইন্টারভিউতে সাধারণত যে সমস্ত প্রশ্ন করা হয় সেগুলোর উত্তর যদি মোটামুটি ভাবে ইংরেজিতে দিতে পারেন তাহলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এছাড়া যদি নরওয়ের ভিসা পাওয়ার যোগ্যতার কথা বলা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে যা আপনাকে পূরণ করতে হবে।

আপনি যদি নূন্যতম এইচএসসি বা ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য ভিসা প্রসেসিং অনেকটাই সহজ হবে। এরপরে আপনি যে সেক্টরে কাজ করতে চাচ্ছেন সেই সেক্টরের কাজের উপরে যদি নূন্যতম এক বছরে দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি ভিসা পাওয়ার দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকবেন। আপনি রেস্টুরেন্ট বা কোন মিল ফ্যাক্টরিতে কাজের জন্য নরওয়ে যেতে চাচ্ছেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে এই সমস্ত কাজের উপর এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে অন্যান্য মিডেলিস্ট কান্ট্রি গুলোতে যেতে সাধারণত শিক্ষাগত যোগ্যতার তেমন কোন প্রয়োজনীয়তা থাকে না তবে নরওয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে অন্তত ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে মোটামুটি ভালো জ্ঞান রাখতে হবে।

নরওয়ে তে যে সমস্ত কাজের চাহিদা রয়েছে

  • আইসক্রিম ফ্যাক্টরি
  • ফুড ফ্যাক্টরি
  • ফুড প্রসেসিং
  • ফুড প্যাকেজিং
  • ওয়ারহাউজ বা গুদামে কাজ
  • হোটেল
  • রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যে সমস্ত শ্রমিকেরা কাজের উদ্দেশ্যে নরওয়ে যাচ্ছে তারা সাধারণত উপরে বর্ণিত কাজগুলোর জন্যই যাচ্ছে। উপরে যে সমস্ত কাজের কথা বলা হয়েছে যেমন বিভিন্ন হোটেল বা রেস্টুরেন্টের কাজ, এই কাজগুলো যেমন সহজে পাওয়া যায় তেমনি খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না যার কারণে অনেকে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের কাজের জন্য নরওয়ে যেয়ে থাকে। আপনি আপনার পছন্দ মতো বা আপনার দক্ষতা অনুযায়ী যে কোন একটি কাজের ভিসা নিয়ে নরওয়ে যেতে পারবেন। 

নরওয়ের বেতন কত

একটি দেশে কাজের বেতন কত হবে সেটি আসলে একুরেট ভাবে বলা কখনোই সম্ভব না কারণ বেতনের পরিমাণ একজন শ্রমিক বা কর্মচারীর কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কাজের চুক্তি সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। আপনি কোন কাজের জন্য নরওয়েতে যেতে চাচ্ছেন, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন, আগে থেকে কাজের কোনরকম অভিজ্ঞতা আছে কি না, কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি করছেন এই সমস্ত বিষয়ের উপরে নির্ভর করে কম বা বেশি হতে পারে। তবে আপনি যদি আপনার কাজে মোটামুটি দক্ষ হন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার বেতন ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

বেতনের পাশাপাশি নরওয়ের কোম্পানিগুলা সাধারণত তাদের কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা করে থাকে ফ্রি তে, তবে খাবারের খরচ নিজেকে বহন করতে হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ বিল, ওয়াইফাই বিল, পানি বিল এবং গ্যাস বিল সহ এ সমস্ত যে খরচ গুলো রয়েছে সেগুলো আপনাকে বহন করতে হবে।

নরওয়ের ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে

নরওয়ের ভিসা প্রসেসিং এর জন্য সাধারণত নিচে উল্লেখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হবেঃ
  • বৈধ পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • এনআইডি কার্ড
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • সিভি
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র বা সার্টিফিকেট
  • কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট ইত্যাদি
তবে সব ভিসার ক্ষেত্রে সাধারণত একই ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয় না, ভিসার ধরন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপরে নির্ভর করে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। তাই আপনি যখন ভিসার জন্য আবেদন করবেন তখন এজেন্সি বা যার মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে যাচ্ছেন তার থেকে জেনে নেবেন কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

শেষ কথা

নরওয়ে যেহেতু ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং সেনজেনভুক্ত একটি দেশ তাই এই দেশটির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে দেশের কিছু প্রতারক চক্র ভুলভাল তথ্য দিয়ে অনেককে ঠকিয়ে চলেছে। তাই ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ফাইল জমা দেয়ার আগে যার মাধ্যমে প্রসেসিং করাতে চাচ্ছেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত খবরা-খবর নিয়ে এরপরে টাকা পয়সা লেনদেন করবেন। যেহেতু নরওয়ে একটি উন্নত দেশ তাই সেখানে অবশ্যই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা রয়েছে তবে খুব সতর্কতার সাথে ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজটি করানো উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url