গ্রিস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 বেতন, কাজের চাহিদা ও আবেদন

গ্রিস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 বেতন, কাজের চাহিদা ও আবেদন

গ্রিস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024

আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন, আপনাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি নতুন আরেকটি আর্টিকেলে যেখানে আলোচনা করা হবে গ্রীস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ নিয়ে। গ্রিসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কিত যে সকল তথ্য আজকে আলোচনা করা হবে সেগুলো হলোঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত টাকা, সব মিলিয়ে গ্রিসে যেতে কত টাকা লাগে, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মাসিক বেতন কত এবং সর্বশেষে গ্রিসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং আবেদনের লিংক সম্পর্কে। আপনি যদি গ্রিসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি গ্রিসের ওয়ার্ক পারমিট সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।

গ্রিস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

সম্প্রতি গ্রীস সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের একটি চুক্তি হয়েছে যেখানে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কাজের জন্য ৪৫০০ লোক নিয়োগ করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে গ্রিসে বিভিন্ন সেক্টরে নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে যার কারণে দেশীয় শ্রমিকের পাশাপাশি তাদের বিদেশি শ্রমিকের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে ২০২৪ সালে গ্রিসে দিজনাল ওয়ার্কার হিসেবে কৃষি কাজে শ্রমিক নিয়োগ করা হচ্ছে আপনি চাইলে যে সকল বিশ্বস্ত এজেন্সি রয়েছে তাদের মাধ্যমে খুব সহজেই এ সমস্ত ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

উন্নত জীবনযাপন এবং বেতনের দিক দিয়ে চিন্তা করলে গ্রীস অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচিত হয়। গ্রিসের অর্থনীতি মূলত কৃষি, সেবা খাত এবং শিল্প খাতের উপরে নির্ভরশীল যার কারণে সেখানে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই তিনটে খাত বাদেও আরো পর্যটন খাত, পরিবহন খাত এবং হোটেল বা রেস্টুরেন্ট সেক্টরের শ্রমিকের চাহিদাও সেখানে রয়েছে। গ্রিসের যে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেখানে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে বিদেশী পর্যটকের আনাগোনা হয় যার কারণে হোটেল বা রেস্টুরেন্ট সেক্টরেও বেশ ভালো পরিমাণের কর্মী সংকট রয়েছে। তবে বর্তমানে যদি চাহিদা সম্পন্ন কাজের কথা চিন্তা করেন তাহলে এক কথায় বলা যায় গ্রিসে বর্তমানে শিল্প এবং কৃষি খাতে শ্রমিকদের চাহিদা সবচাইতে বেশি রয়েছে।

যেহেতু অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কৃষি এবং শিল্প খাত বিবেচিত হয় তাই দেশটির সরকার বর্তমানে সেক্টরগুলোতে উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই শ্রমিক সংকট মোকাবেলা করার জন্য প্রতিবছর গ্রিস বিভিন্ন সেক্টরে বিদেশী শ্রমিক নিয়োগের জন্য অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে আপনি চাইলে সেখান থেকে ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করে এরপরে ভিসা প্রসেসিং করিয়ে নিতে পারবেন।

গ্রিসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেসকল কাজ পাওয়া যায়

গ্রীসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে যেগুলোর উপরে নির্ভর করে বেতন নির্ধারণ করা হয়। সবচাইতে বেশি চাহিদা সম্পন্ন দুটি খাত কৃষি এবং শিল্প খাতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে খাত গুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ
  • বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্প
  • পানীয় জাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প
  • জাহাজ নির্মাণ শিল্প
  • কৃষি শ্রমিক
  • রাজমিস্ত্রি
  • ইলেকট্রিশিয়ান
  • প্লাম্বার
  • অন্যান্য কনস্ট্রাকশন কাজের শ্রমিক
  • ড্রাইভিং
  • হোটেল বা রেস্টুরেন্ট
  • সিকিউরিটি গার্ড
  • ক্লিনার

গ্রিসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে

উপরে উল্লেখিত যে কোন একটি কাজে যদি আপনি দক্ষ হন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি সেই কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারবেন। তবে সাধারণভাবে যদি আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গ্রীস যাওয়ার সামগ্রিক খরচের কথা চিন্তা করেন তাহলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৬ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এই খরচটা বেড়ে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

যেহেতু ভিসা প্রসেসিং সহ অন্যান্য যে খরচ গুলো রয়েছে সেগুলো আপনি কোন মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করছেন সেটির উপরে নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ যদি আপনি নিজে নিজে ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করে এরপরে ভিসা প্রসেসিং করান তাহলে সে ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন খরচে আপনি গ্রিসে যেতে পারবেন। অন্যদিকে আপনি যদি কোন এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে প্রসেসিং করান সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ খরচ ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ভিসা প্রসেসিংয়ের যে খরচটা সেটি একরকম আপনার উপরে নির্ভর করবে। 

তবে কাজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী অনেক সময় ভিসার দাম কম বা বেশি হতে পারে। যেমন রাজমিস্ত্রি অথবা জাহাজ নির্মাণ শিল্পে যদি আপনি কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ৮ লক্ষ থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ড্রাইভিং, কৃষিকাজ এবং বিভিন্ন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে কাজের জন্য যেতে চাইলে আপনার ভিসা প্রসেস এবং বিভিন্ন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে কাজের জন্য যেতে চাইলে আপনার ভিসা প্রসেসিং এবং সমস্ত খরচ মিলে মোট ৬ লক্ষ থেকে শুরু করে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে ভিসা আবেদন ফি, বিমান ভাড়া, ভিসার দাম, এজেন্সির খরচ, মেডিক্যাল ফি সহ অন্যান্য সমস্ত খরচ মিলে গ্রিসে যেতে হলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৬ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। তবে ভিসার ধরন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপরে নির্ভর করে এই খরচটা সর্বোচ্চ ১২ লক্ষ টাকা অবদি পৌঁছাতে পারে।

গ্রিসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন

গ্রিসে সাধারণত একজন কর্মীর কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করে বেতন কম বা বেশি ধার্য করা হয়ে থাকে। আপনি গ্রিসে কোন কাজের জন্য যাচ্ছেন, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন এবং কাজের অভিজ্ঞতা আছে কিনা এই সমস্ত বিষয়ের উপরে ভিত্তি করে আপনার বেতন কত হবে সেটি নির্ধারণ করা হবে। তবে সর্বনিম্ন বেতনের কথা বলতে গেলে বর্তমানে গ্রিসের একজন শ্রমিক প্রতিমাসে সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে আপনার যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে আপনার বেতন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে প্রতি মাসে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড এবং ক্লিনারদের বেতন সাধারণত ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে প্লাম্বার, জাহাজ নির্মাণ সম্পর্কিত যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলোর বেতন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে কেউ যদি এ কাজগুলোতে দক্ষ হতে পারে তাহলে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বেতন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

গ্রিসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকেই গ্রিসের যে কোন রকমের ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। বাংলাদেশী নাগরিকদের ভিসা আবেদনের সুবিধার কথা বিবেচনায় বর্তমানে ঢাকাতে গ্রীস ভিসা ওয়ার্ল্ড সেন্টার চালু রয়েছে যাদের মাধ্যমে আপনি যেকোনো ধরনের ভিসা প্রসেসিং করাতে পারবেন। আপনি তাদের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এই লিংকের মাধ্যমে https://bd-gr.gvcworld.eu/en/online-visa-application

এই লিংকে প্রবেশ করার পর আপনি সেখান থেকে একটি ভিসা আবেদন ফর্ম পেয়ে যাবেন এরপরে সেটি আপনার ব্যক্তিগত যে তথ্যগুলো চাওয়া হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে তাদের কাছে জমা দেওয়ার মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন। তবে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত কারণ এক্ষেত্রে ভুল করলে পরবর্তীতে ভিসা প্রসেসিং এর সমস্যা হতে পারে। আপনার পক্ষে যদি ফরম টি পূরণ করা সম্ভব না হয় তাহলে আশপাশের কম্পিউটারের দোকানগুলো রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে ফরম পূরণ করিয়ে নিতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url