এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। ইউরোপের অবস্থিত এস্তোনিয়া, যে দেশটি অনেক দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যার কারণে সেখানে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সেজন্য দেশীয় কর্মীর পাশাপাশি তারা বিদেশ থেকে প্রতিবছর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক কর্মী নিয়োগ করে থাকে। যারা বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় এস্তোনিয়া যেতে চাচ্ছেন তাদের যে সমস্ত ইনফরমেশন গুলো জানা দরকার সেগুলো সম্পর্কে থাকছে আজকের আর্টিকেল টি।
দেশ হিসেবে এস্তোনিয়া কেমন
ইউরোপে অবস্থিত এই দেশটির প্রতিবেশী হিসেবে উত্তরে রয়েছে ফিনল্যান্ড, পশ্চিমে রয়েছে সুইডেন, দক্ষিনে লাটভিয়া এবং পূর্বে রয়েছে রাশিয়া। দেশটির রাজধানী হচ্ছে তালিন (Tallin) যেটি বিশ্বের উন্নত এবং প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি শহর হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এছাড়াও এস্তোনিয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দ্রুত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়া একটি দেশ। অতীতে এস্তোনিয়া জার্মানি, সুইডেন এবং রাশিয়ার দ্বারা শাসিত হয়েছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এস্তোনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।
২০০৪ সালে এসে এস্তোনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভ করে এবং ন্যাটো তে যোগ দেয়। এস্তোনিয়ার লোকজন এস্তোনিয়ান ভাষায় কথা বলে এবং মুদ্রা হিসেবে সেখানে ইউরো প্রচলিত রয়েছে। দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ১৩ লাখের মতো। তবে ইউরোপের একটি ছোট্ট দেশ হলেও এটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। এছাড়াও এটি একটি ভুক্ত দেশ হওয়ার কারণে সেখানে যদি আপনি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যান তাহলে ভবিষ্যতে আপনি সেখান থেকে অন্যান্য যে সেনজেনভুক্ত দেশগুলো রয়েছে সেখানে মুভ করতে পারবেন।
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে
এস্তোনিয়া তে আপনি যে কাজের জন্যই যান না কেন আপনার ভিসার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ এক বছর, অর্থাৎ এক বছর পর পর আপনাকে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যে যে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হচ্ছে সেগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
- ইঞ্জিনিয়ারিং
- ক্লিনিং বা ক্লিনার ভিসা
- কৃষি ভিসা
- গার্মেন্টস ভিসা
মূলত উপরে বর্ণিত সেক্টরগুলোতে আপনি বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন। এখানে শুধুমাত্র সেক্টরের নাম উল্লেখ আছে এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকার কাজ রয়েছে যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি। ক্লিনিং বা ক্লিনার ভিসার কাজের মধ্যে রয়েছে অফিস ক্লিনার, রেস্টুরেন্ট ক্লিনার, রোড ক্লিনার ইত্যাদি। কৃষি ভিসার মধ্যে সিজনাল কৃষি ভিসা, গবাদিপশু পালন, বিভিন্ন ফসলের জমিতে কাজ, বিভিন্ন সবজি বা ফলমূলের বাগানে কাজ ইত্যাদি। অন্যদিকে গার্মেন্টস সেক্টরে বাংলাদেশের সাধারণত যে ধরনের কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় সেখানেও একই কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করা হয়।
তবে এস্তোনিয়া তে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার আগে আপনি যে কাজে দক্ষ বা আগে থেকে আপনি যে কাজগুলো খুব ভালোভাবে জানেন সে ধরনের কাজের জন্য আবেদন করবেন এতে করে আপনার ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। এছাড়াও এস্তোনিয়া তে যে কোন কাজের বেতন নির্ধারণ করা হয় কাজের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর তাই আপনার যদি কাজের অভিজ্ঞতা ভালো থাকে তাহলে বেশি বেতন পাওয়া সম্ভাবনা থাকবে।
এস্তোনিয়া তে বেতন কত
এস্তোনিয়া তে আপনার বেতন কত হবে সেটি নির্ভর করবে আপনি কোন কাজের জন্য সেখানে যাচ্ছেন এবং আপনি আপনার কাজে কতটুকু পারদর্শী এছাড়াও আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন এর উপরে নির্ভর করেও বেতন কম বা বেশি হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যে সমস্ত কাজের জন্য প্রবাসী রা এস্তোনিয়া তে যাচ্ছে এগুলোর বেতন কেমন হবে সে সম্পর্কে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছি।
বর্তমানে এস্তোনিয়া তে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর এবং কৃষি কাজের চাহিদা বেশি যার কারণে স্বাভাবিকভাবে এই কাজগুলোর বেতন বেশি হয়ে থাকে। আপনি যদি এই কাজগুলোতে মোটামুটি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার বেতন প্রতিমাসের ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হবে। আর ক্লিনার এবং গার্মেন্টস ভিসার ক্ষেত্রে বেতন একটু কম হবে। যদিও এই কাজগুলোর ও চাহিদা খুব ভালো পরিমাণে রয়েছে কিন্তু সেই অনুযায়ী বেতন একটু কম। তবে যাদের খুব বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের দক্ষতা নেই তাদের জন্য ক্লিনার এবং গার্মেন্টস ভিসা উপযুক্ত হবে। আপনি যদি গার্মেন্টস বা ক্লিনার ভিসায় এস্তোনিয়া তে যান তাহলে আপনার বেতন হবে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
উপরে বর্ণিত বেতনের পরিমাণ সবসময় যে একই রকম থাকবে বিষয়টি এমন নয় ক্ষেত্রবিশেষে কম বা বেশি বেতন হতে পারে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি যে মাধ্যমে বা যে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করছেন তাদের থেকে বিস্তারিত জেনে নিয়ে এরপরে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
বাংলাদেশ থেকে কিভাবে এস্তোনিয়া তে যাবেন
এস্তোনিয়ার ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য আপনি দুটি মাধ্যম অবলম্বন করতে পারেন এর মধ্যে একটি হলো আপনি নিজে নিজে এস্তোনিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইট বা জব সার্চিং যে ওয়েবসাইট গুলো আছে সেখান থেকে কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। এবং আরেকটি উপায় হচ্ছে বিভিন্ন বাংলাদেশ এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করা। তবে আপনারা যদি কম খরচে ভিসা পাওয়ার কথা চিন্তা করেন তাহলে নিজে নিজে কাজ খুঁজে সেখানে আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে এরপরে ভিসা প্রসেসিং করে খুব কম খরচেই এস্তোনিয়া তে যেতে পারবেন।
আপনাদের সুবিধার্থে এস্তোনিয়ার একটি জব সার্চ ওয়েবসাইটের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি আপনারা চাইলে এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে সেখানকার বিভিন্ন কোম্পানির জব সার্কুলারে আবেদন করতে পারেন।
ওয়েবসাইট লিংক https://workinestonia.com/
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url