বুলগেরিয়ার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া,যোগ্যতা ও ভিসা সাকসেস রেট

বুলগেরিয়ার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া,যোগ্যতা ও ভিসা সাকসেস রেট

বুলগেরিয়ার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া,যোগ্যতা ও ভিসা সাকসেস রেট

আজকে আর্টিকেলে আমরা বুলগেরিয়াতে যাওয়ার উপায় থেকে শুরু করে কিভাবে আবেদন করবেন, কি কি ডকুমেন্ট লাগবে, কত সময় লাগবে, ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা কেমন, ভিসা প্রসেসিং এর জন্য ইন্ডিয়াতে যেতে হবে কিনা এই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার কাজের ভিসা নিয়ে বুলগেরিয়াতে যেতে চান তারা কিভাবে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া টি অর্থাৎ ভিসার আবেদন থেকে শুরু করে হাতে পাওয়া পর্যন্ত যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। আশা করছি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

বুলগেরিয়া হলো ইউরোপের যে সেনজেনভক্ত দেশগুলো রয়েছে সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে একটি। একই সাথে বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়া এই দুটি দেশ দীর্ঘ ১০ বছর সংগ্রামের পর তারা সেনজেন ভুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বুলগেরিয়ার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

বুলগেরিয়ার ভিসা আবেদনের জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন সেগুলো হলঃ
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • বৈধ পাসপোর্ট
  • ওয়ার্ক পারমিট
  • কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিডিও ডকুমেন্ট

বুলগেরিয়ার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

বুলগেরিয়াতে ভিসার জন্য আবেদন করার আগে সর্বপ্রথম আপনাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জোগাড় করতে হবে। শুধু সার্টিফিকেট জোগাড় করলেই হবে না এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিগালাইজেশন ও করতে হবে। ইউরোপের যে অন্যান্য দেশগুলো রয়েছে সেই দেশগুলোর মতোই ভিসা আবেদনের আগে আপনাকে এই সমস্ত ডকুমেন্ট রেডি করে ফেলতে হবে এরপরেই কেবলমাত্র আপনি ভিসার জন্য আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করবেন।

বুলগেরিয়াতে আবেদনের জন্য আপনাকে এম্বাসিতে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে, শুধু আবেদনের জন্য নয় আপনি যখন যে কোন ডকুমেন্ট বুলগেরিয়ার এম্বাসি থেকে লিগালাইজ করতে যাবেন তখনও আপনাকে আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এছাড়া আপনার আবেদন পত্র অর্থাৎ ফাইল টি সাবমিশনের জন্য আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট এর প্রয়োজন হবে যার কারণে এ প্রক্রিয়াটি অনেক জটিল এবং সময় সাপেক্ষ হয়ে থাকে। আরেকটি বিষয় হলো বাংলাদেশে বুলগেরিয়ার কোন দূতাবাস নেই যার কারণে ভিসা প্রসেসিংয়ের সমস্ত কার্যক্রম আপনাকে ইন্ডিয়ায় গিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।

তাই যারা বুলগেরিয়া তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন তারা অন্তত ছয় মাস থেকে শুরু করে ৮ বা ৯ মাসের একটি সময় হাতে রেখে এরপরে আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু করবেন। আরেকটি বিষয় হল ইন্ডিয়াতে আপনাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে হবে অন্য কারো মাধ্যমে আপনি করাতে পারবেন না। বাংলাদেশীদের জন্য এটি অনেক বড় একটি অসুবিধা কারণ ইন্ডিয়াতে যেতে হলেও আলাদা করে ভিসা এবং পাসপোর্ট এর একটি ঝামেলা পোহাতে হয় এছাড়া খরচের ব্যাপারটা তো থাকছেই।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লিগালাইজেশন এর পর আপনাকে আরো কিছু ডকুমেন্ট রেডি করতে হবে যেমন পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আপনি যে কাজে দক্ষ সেই কাজের প্রমাণপত্র, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার কাজের দক্ষতার প্রমাণপত্র হিসেবে ভিডিও ডকুমেন্টের প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যদি সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে বুলগেরিয়া যেতে চান তাহলে সেলাই মেশিন এর কাজের একটি ভিডিও দিতে হবে, যদি আপনি কোন গাড়ির মেকানিক হিসেবে যেতে চান তাহলে সেই কাজের একটি ভিডিও দিতে হবে এই আর কি। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় আপনি যদি একজন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে বুলগেরিয়াতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার কাজের দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে তা না হলে তারা কখনোই আপনাকে একজন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গণনাও করবে না এবং ভিসাও দিবে না।

এক কথায় যদি সমস্ত আবেদনের আগে যে প্রস্তুতি গুলো রয়েছে সেগুলোর কথা বলি তাহলে শুরুতেই আপনাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তুলে সেটিকে এমব্যাসির মাধ্যমে লিগালাইজেশন করাতে হবে। এরপরে আপনি যখন আবেদন করতে চাচ্ছেন তখন থেকে আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ যেন নূন্যতম এক থেকে দেড় বছর থাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সমস্ত আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে অন্তত ৬ থেকে ৮ মাস সময় লাগবে এ সময়টি হাতে নিয়ে আবেদন করবেন।

আপনি বুলগেরিয়ার ভিসা পাবেন কি না

যারা বিভিন্ন ভিসায় দেশের বাইরে কাজের জন্য যেতে চান ভিসা আবেদনের আগে সবচাইতে বেশি চিন্তিত থাকেন যে বিষয়টি নিয়ে সেটি হল ভিসা আবেদনের পর আপনার ভিসা এপ্রুভ হবে কিনা। আপনি যদি বুলগেরিয়ার ভিসা পাওয়ার কথা চিন্তা করেন তাহলে একটি কথাই বলা যায় যে আপনি যদি কোন ভাবে এম্বাসি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন বা অ্যাম্বাসিতে আপনার ফাইল জমা করতে পারেন তাহলে ভিসা পাওয়া সম্ভবনা 99%। কারণ আপনি যখন বুলগেরিয়ার কোন কোম্পানিতে ওয়ার্ক পারমিট পাবেন তখনই আপনাকে সেই ওয়ার্ক পারমিট টি পরিপূর্ণভাবে ভেরিফাই করে এরপরে দেয়া হবে যার কারণে ভিসার জন্য আবেদন করার পর অতিরিক্ত ভাবে কোন যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন হবে না।

অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় আপনি যদি বুলগেরিয়ার যে কোন কোম্পানি থেকে একটি ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করতে পারেন তাহলে আপনার ভিসা পাওয়া সম্ভব না ৯৯%। বুলগেরিয়া সহ পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত দেশের ভিসা প্রসেসিং এর কাজটি সাধারণত ফরেন মিনিস্ট্রি করে থাকে এক্ষেত্রে কেউ যদি সম্পূর্ণ রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী ভিসার জন্য আবেদন করে সেক্ষেত্রে ভিসার আবেদন গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।

তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু হতে পারে সেজন্যই ইউরোপের ভিসা সাকসেস রেট কখনোই ১০০ পার্সেন্ট সেটা বলা যাবে না রিজেকশনের হার যদিও কম তবুও কখনোই সাকসেস রেট ১০০% হওয়া সম্ভব না। তবে ৯৯% ভিসা সাকসেস রেট মানে ১০০ জন যদি বুলগেরিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করে তাহলে মাত্র একজন ভিসা পাবে না বাকি ৯৯ জনই সহজেই ভিসা পেয়ে যাবে।

শেষ কথা

ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় যেহেতু বুলগেরিয়ার ভিসা সাকসেস রেট বেশি তাই আপনি যদি নিরাপদে ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত কোন দেশে যেতে চান তাহলে আপনার জন্য বুলগেরিয়া বেস্ট হবে। দেশটিতে কিছু সাধারণ কাজ যেমনঃ বাস-ট্রাক বা কার মেকানিক, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ এ জাতীয় কাজ খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং প্রচুর পরিমাণে বিদেশে শ্রমিক নিয়োগ করে দেশটি তাই আপনি যদি খুব বেশি শিক্ষিত না হন এবং কোন কাজেই খুব বেশি অভিজ্ঞ না হন তাহলে প্রবাসী হিসেবে আপনার বুলগেরিয়া দেশটি পেছনে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 99 ভিসা সাকসেস শতাংশ থাকার কারণে এই দেশটিতে যাওয়া অনেকটাই নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়। এছাড়া ইউরোপের সেনজেনভক্ত দেশ হওয়ার কারণে কিছু অতিরিক্ত সুবিধা তো থাকছেই। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url