ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা খরচ এবং প্রক্রিয়া

ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা খরচ এবং প্রক্রিয়া

ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা খরচ এবং প্রক্রিয়া

সম্প্রতি ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া সেনজেন ভুক্ত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশীদের ইউরোপে আসার স্বপ্নটা পূরণ করা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদের ক্ষেত্রেও ইউরোপে বৈধ হওয়ার জন্য ক্রোয়েশিয়া একটি সঠিক মাধ্যম হতে পারে। যারা বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান বা অন্য কোন দেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তাদের ক্ষেত্রে ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া, কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে, কত সময় লাগবে এবং গিয়ে কি কাজ করবেন এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে আপনার কত টাকা খরচ হবে এবং আপনি যদি ক্রোয়েশিয়ায় স্থায়ী হতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে কত টাকা খরচ হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো আজকের আর্টিকেলটিতে।

ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট

ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার সর্ব প্রথম স্টেপ হলো আপনাকে প্রথমে একটি ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করতে হবে। এই ওয়ার্ক পারমিট আপনি দুইভাবে পেতে পারেন; নিজে নিজে আবেদন করতে পারেন এবং কোন এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। তবে নিজে আবেদন করার প্রক্রিয়াটি অনেক জটিল এবং সে ক্ষেত্রে ভিসা না পাওয়া সম্ভাবনাই ৯৯%। তাই এক্ষেত্রে নিজে আবেদন না করে কোন এজেন্সির শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

ওয়ার্ক পারমিটের জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে

ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনের জন্য মূল যে কাগজ পত্রগুলো লাগবে সেগুলো হলো; আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যেটি আপনি চাইলে নিজে নিজেই ব্যবস্থা করতে পারেন। এরপরে আপনার প্রয়োজন হবে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে একাডেমিক সার্টিফিকেট অর্থাৎ আপনি যদি এসএসসি বা এইচএসসি পাস হন সেক্ষেত্রে সেই সার্টিফিকেট গুলা প্রয়োজন হবে। এরপরে আপনার পাসপোর্ট সাইজের কয়েক কপি ছবি, আপনার যদি বাংলাদেশে কোন কাজের অভিজ্ঞতা থাকে হঠাৎ আপনি যদি বাংলাদেশের কোন কোম্পানিতে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে থাকেন তাহলে কাজের দক্ষতার একটি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। মূলত এই ডকুমেন্টস গুলো হলেই আপনি ক্রোয়েশিয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।  

এই ডকুমেন্টসগুলো দিয়ে আবেদন করার পর যখন আপনি ওয়ার্ক পারমিট পাবেন এরপরে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি যে এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করেছিলেন তারাই আপনাকে ভিসার অ্যাপ্লিকেশন থেকে শুরু করে হাতে পাওয়া পর্যন্ত সমস্ত কাজে সাহায্য করবে।

ওয়ার্ক বা ভিসা পেতে কত সময় লাগবে ?

ওয়ার্ক পারমিট বা ভিসা প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে কত সময় লাগবে সেটি নির্দিষ্ট করে বলা যায় না কারণ এটি পরিস্থিতির সাথে পরিবর্তিত হয়। তবে ওয়ার্ক পারমিট এবং ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পাওয়ার জন্য আনুমানিক আপনার ৪ থেকে ৬ মাস সময় লাগতে পারে। যেহেতু ভিসা প্রসেসিং অনেক দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া তাই আপনাকে ধৈর্য সহকারে সেই সময় অবদি অপেক্ষা করতে হবে। 

ক্রোয়েশিয়ার রেসিডেন্স কার্ড

ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসা হাতে পাওয়ার পর আপনি ক্রোয়েশিয়া চলে যেতে পারবেন এরপরে যে বিষয়টি সামনে আসবে সেটি হল রেসিডেন্স কার্ড । আপনি যে কোম্পানির ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সেখানে যাবেন ওই কোম্পানি মূলত আপনার রেসিডেন্স কার্ড পেতে যত প্রক্রিয়া আছে তা সম্পন্ন করবে। আপনি যে কোম্পানির পারমিট নিয়ে যাবেন তারাই আপনার বাড়ি ভাড়া, ওয়ার্ক পারমিট এবং রেসিডেন্স কার্ড পাওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটি কোম্পানির পক্ষ থেকে সম্পন্ন করা হবে যার জন্য এক থেকে দুই মাস সময় লাগবে। এই দুই মাসের মধ্যেই আপনি ক্রোয়েশিয়ার রেসিডেন্স কার্ড বা সেখানে বসবাসের যে অনুমতি পত্র সেটি পেয়ে যাবেন। 

ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

ওয়ার্ক পারমিট আবেদন থেকে শুরু করে ভিসা হাতে পাওয়া পর্যন্ত মোট কত টাকা খরচ হবে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া যেতে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা মত খরচ হবে। বর্তমানে যে সকল এজেন্সি ক্রোয়েশিয়ার ভিসা নিয়ে কাজ করছে তাদের মধ্যে কিছু এজেন্সি আছে যারা ৯ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে আপনাকে ক্রোয়েশিয়ার ভিসা দিবে তবে সে সম্ভাবনা খুবই কম। ক্রোয়েশিয়া যেহেতু ইউরোপিয়ান কান্ট্রি এবং সেনজেন ভুক্ত তাই এদেশের ভিসার কিন্তু অনেক ডিমান্ড রয়েছে এজন্য এজেন্সি গুলো অনেক সময় ১২ লাখেরও বেশি টাকা নিয়ে থাকে।

তবে আপনি যদি ইউরোপের অন্যান্য কান্ট্রি গুলা থেকে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার কোন প্রকার ভিসার প্রয়োজন হবে না এবং আপনি চাইলে বাই রোডে অথবা বিমানে সেখানে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কোন প্রকার এজেন্সি ছাড়া নিজেই আপনার ওয়ার্ক পারমিট সহ রেসিডেন্সিয়াল কার্ড করে নিতে পারবেন এর জন্য কোন কোম্পানি বা কোন এজেন্সিকে আপনাকে কোন প্রকার টাকা পয়সা দিতে হবে না।

শেষ কথা

ক্রোয়েশিয়া যেহেতু ইউরোপিয়ান সেনজেনভুক্ত কান্ট্রি তাই আপনি যদি যেকোনো ভিসায় এখানে এসে এরপরে যদি সেখানকার নাগরিকত্ব পান তাহলে আপনি ভবিষ্যতে সেনজেনভুক্ত যে আরও ২৭ টা কান্ট্রি রয়েছে সেখানে কোন প্রকার ভিসা ছাড়া যে কোন উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। শুধু তাই নয় আপনার যদি ভবিষ্যতে কোনো কারণে ক্রোয়েশিয়ায় থাকতে কোন প্রকার অসুবিধা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি সেনজেন ভুক্ত যে কোন দেশে গিয়ে সেখানে কাজ খুঁজে নিয়ে রেসিডেন্ট কার্ড সহ বসবাসের অনুমতি খুব সহজেই পেয়ে যেতে পারেন। তাই আপনি যদি অভিবাসনের জন্য ক্রোয়েশিয়া দেশটি বেছে নিয়ে থাকেন তাহলে বলাই যায় আপনি কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেননি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url