ইউরোপের হৃদয়ে অবস্থিত বেলজিয়ামের মুদ্রা ও রাজধানী
ইউরোপের হৃদয়ে অবস্থিত বেলজিয়ামের মুদ্রা ও রাজধানী
পশ্চিম ইউরোপের একটি ছোট্ট এবং বৈচিত্র্যময় দেশ হলো বেলজিয়াম। দেশটির উত্তরে নেদারল্যান্ডস, পূর্বে জার্মানি, দক্ষিণে লুক্সেমবার্গ এবং পশ্চিমে ফ্রান্স অবস্থিত। বেলজিয়াম মূলত তিনটি প্রধান অঞ্চল নিয়ে গঠিত সেগুলো হল ফ্ল্যান্ডার্স, ওয়ালোনিয়া, এবং ব্রাসেলস-আরিয়া। ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যবাহী এই দেশটি সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বেলজিয়ামের রাজধানীর নাম কি
বেলজিয়ামের রাজধানীর নাম ব্রাসেলস যেটি সবচাইতে বড় শহর এবং দেশটির রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মূল কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ব্রাসেলস শহরটির অবস্থান বেলজিয়ামের ফ্লান্ডার্স অঞ্চলে। শহরটি আন্তর্জাতিকভাবেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদর দপ্তর অবস্থিত। ব্রাসেলস-সিটি এবং ব্রাসেলস-প্রদেশ দুটি অংশে ব্রাজিল শহর টি বিভক্ত হয়েছে।এই শহরটি অনেক বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলার জন্য বিখ্যাত। এমন কিছু স্থাপনার নাম; গ্রান্ড প্লেস, মাইকেল ও সেন্ট গুডুলাস ক্যাথেড্রাল এবং অ্যাটমিয়াম।
বেলজিয়ামের মুদ্রার নাম কি
বেলজিয়ামে বর্তমানে মুদ্রা হিসেবে ইউরো (EUR) প্রচলিত আছে , যেটি ২০০২ সালের পহেলা জানুয়ারি বেলজিয়ামের আনুষ্ঠানিক মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত হয় এর আগে বেলজিয়ামের মুদ্রার নাম ছিলো বেলজিয়ান ফ্রাঁক (BEF)।ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত যে ২৬ টি দেশ রয়েছে তাদের প্রত্যেকটি দেশেই ইউরো একটি অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত আছে যেটি ইউরোজোন নামে পরিচিত। বাংলাদেশি মুদ্রার মতো ইউরোর কয়েন এবং নোট উভয় প্রকারই প্রচলিত রয়েছে।১, ২, ৫, ১০, ২০ এবং ৫০ সেন্ট, ১ ইউরো এবং ২ ইউরো মানের ইউরো কয়েন প্রচলিত আছে। এবং নোট হিসেবে ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ এবং ৫০০ ইউরোর নোট প্রচলিত আছে। ইউরোর প্রতিটি নোটের ডিজাইন তাদের যে ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলো রয়েছে সেটির আদলে তৈরি হয়ে থাকে। অন্যদিকে কয়েনের দুইটি পিঠের মধ্যে একটি সাধারণ পিঠ এবং অন্যটির জাতীয় ফিট থাকে যা সেদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের পরিচিতির প্রতীক হিসেবে কাজ করে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাধারণ মুদ্রা হিসেবে ইউরোর প্রচলন থাকার কারণে সেখানকার আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সমস্ত কার্যক্রমে অনেক সহজ হয়েছে।
বেলজিয়ামের ধর্ম কি
বেলজিয়ামের প্রধান ধর্ম হিসেবে খ্রিস্টান ধর্মের প্রচলন রয়েছে বিশেষ করে ক্যাথলিক ক্রিস্টিয়ানরা প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠী তবে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বীরাও দেশটি তে কিছু পরিমানে আছেন।এছাড়াও বেলজিয়ামের অন্যান্য ধর্মীয় জনগোষ্ঠীগুলো হলো মুসলিম, ইহুদি এবং বিভিন্ন পূর্ব ধর্মীয় সম্প্রদায়। বর্তমানে বেলজিয়ামে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠছে এবং ধর্মীয় বৈচিত্র্যতা ও বাড়ছে। এছাড়াও বেলজিয়ামে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি প্রচলিত আছে যা সমস্ত ধর্মাবলম্বী মানুষদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সেখানে প্রত্যেকটি ধর্মীয় জনগোষ্ঠী তাদের সহ ধর্মীয় আচরণ অনুষ্ঠান অত্যন্ত নিরাপত্তা সাথে পালন করতে পারেন।
বেলজিয়ামের আয়তন কত
বেলজিয়াম পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং সেনজেন ভুক্ত একটি দেশ যার আয়তন প্রায় ৩০,৫২৮ বর্গকিলোমিটার। দেশটির ভৌগলিক অবস্থান অনেক বৈচিত্র্যময় যেমন; পশ্চিম উত্তর সাগরের তীরে অবস্থিত এবং দক্ষিণের লুক্সেমবার্গ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ফ্রান্সের অবস্থান, উত্তরে রয়েছে নেদারল্যান্ডের সীমানা। এই ছোট্ট দেশটির ভূখণ্ডের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নদ-নদী, পাহাড়ি অঞ্চল যার কারনে দেশটিকে পৃথিবী ব্যাপি একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নামে আখ্যা দেয়া হয়েছে।প্রসাশনিক অঞ্চল
বেলজিয়ামের তিনটি প্রধান প্রশাসনিক অঞ্চল রয়েছেঃ- ফ্লান্ডার্সঃ বৃষ্টির উত্তরের অংশ ফ্লান্ডার্স নামে পরিচিত যেখানে প্রেমিস ভাষাভাষী জনগণের বসবাস রয়েছে।
- ওয়ালোনিয়াঃ ওালিয়া দেশটির দক্ষিণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত যেখানে ফরাসি ভাষাভাষী জনগণ বসবাস করে।
- ব্রাসেলসঃ ব্রাজিল হল বেলজিয়ামের রাজধানী অঞ্চল যে টি টেস্টের প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং সেখানে দুটি ভাষাভাষী জনগণের সংমিশ্রণ রয়েছে।
জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ
বেলজিয়াম সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ার কারণে সেখানকার জলবায়ু অধিকাংশ সময় মৃদু এবং আর্দ্র থাকে। শীতকালে যেমন অতিরিক্ত ঠান্ডাও পড়ে না অন্যদিকে গরম কালেও খুব বেশি তাপমাত্রা দেখা যায় না। যদিও বেলজিয়ামের মৌসুমী পরিবর্তন লক্ষ্য নিয়ম তবুও সেখানকার জলবায়ু যথেষ্ট স্থিতিশীল এবং মনোরম।বেলজিয়ামের প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ খুব একটা বেশি না হলেও সেখানকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। দেশটির ভেতর দিয়ে যেমন ছোট ছোট বন, নদী-নালা উল্লেখ রয়েছে তেমনি কিছু প্রাকৃতিক পার্ক রয়েছে যেগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে লালন করার পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করে। দেশটির ওয়ালোনিয়া অঞ্চলে কিছু প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষিত এলাকার রয়েছে যেখানে জীব বৈচিত্রতা খুবই যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা হয়।
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url