আলবেনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

আলবেনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

আলবেনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো বর্তমানে আলবেনিয়াতে যেতে কত সময় লাগে, কত টাকা খরচ হয় এবং কি কি কাজের ভিসা পাওয়া যাচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যারা কাজের উদ্দেশ্যে আলবেনিয়াতে যেতে ইচ্ছুক তারা আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি আলবেনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে এ টু জেড জানতে পারবেন।

শুরুতেই বলবো আলবেনিয়া কিন্তু একটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভুক্ত এবং নন সেনজেন কান্ট্রি। আলবেনিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সবচাইতে বড় সুবিধা হল আপনি সেখানে মোটামুটি ভালো এমাউন্টের একটি বেতন পাবেন। এছাড়াও আলবেনিয়ার ভিসা প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে খুব কম সময় লাগে এবং কম খরচেই আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন। 

আলবেনিয়াতে কি কি কাজ পাওয়া যায়

আলবেনিয়ার ওয়ার্ক পারমিটে অনেক ধরনের কাজ হয়। বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরি রয়েছে যেখানে তারা লোক নিয়ে থাকে এবং বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি রয়েছে যারা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে প্রচুর পরিমাণে লোক নিয়োগ করে থাকে। আপনি যদি কনস্ট্রাকশন সেক্টরে কাজ করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা অথবা ভাষাগত দক্ষতার খুব একটা প্রয়োজন হয় না। আবাসিক হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে তবে এক্ষেত্রে আপনাকে আলবেনিয়ার লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ জানা থাকতে হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল যে হোটেল গুলো রয়েছে বিশেষ করে ফাইভ স্টার হোটেল গুলা সেখানে কাজের জন্য আপনাকে ইংরেজিতে যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়া রুম বয় বা ডিশ ওয়াসার এর ক্ষেত্রে খুব একটা ভাষা জানার প্রয়োজন হয় না। তবে সাধারণ কিছু শিক্ষাগত যোগ্যতা তারা চাইতে পারে বিশেষ করে হোটেল সেক্টরে কাজ করার জন্য।

অতএব সংক্ষেপে যদি আলবেনিয়াতে সাধারণত কি কি ধরনের কাজ পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বলতে গেলে; কন্সট্রাকশন শ্রমিক বিভিন্ন কোম্পানির কাজ হোটেল বয় ডীশ ওয়াশার রুম বয় ইত্যাদি।

আলবেনিয়া তে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়

 সাধারণত যেগুলো সাধারণ ওয়ার্কার লেভেলের কাজ সেগুলোর ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ৬০০ ইউরোর মধ্যে বেতন হয়ে থাকে যা বাংলাদেশী টাকায় ৬৬ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৬ দিন এবং মাসে ২৪ দিন কাজ করতে হবে। এছাড়া আপনি যদি চান তাহলে ওভারটাইম করতে পারবেন যার জন্য আপনাকে অতিরিক্ত বেতন দেয়া হবে। এছাড়াও কোম্পানি থেকে আপনাকে থাকার জায়গা দেয়া হবে কিন্তু খাবার খরচ আপনার নিজেকে বহন করতে হবে।আলবেনিয়াতে যাওয়ার পর আপনি তিন মাস পরে টিআরসি কার্ড বা টেম্পোরারি রেসিডেন্স কার্ড পাবেন। 

আলবেনিয়া তে যেতে কত টাকা লাগে

বর্তমানে আলবেনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিটে যাওয়ার খরচ সাত লাখ টাকা থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। নরমালি এত টাকা খরচ হওয়ার কথা না তবে বেশি খরচের পিছনে বেশ কয়েকটা কারণ রয়েছে তার মধ্যে এপ্রুভাল কেনার খরচ। আপনি যদি একটি অ্যাপ্রুভাল কিনতে চান তাহলে আপনাকে ৪০০০ থেকে ৫০০০ ইউরো খরচ করতে হবে যেটি বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে চার লাখ থেকে 6 লাখ 70 হাজার টাকা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। এরপরে স্টিকার অ্যাপ্রুভাল বা ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রেও খরচের ব্যাপার আছে। অর্থাৎ শেষ কথায় বলতে গেলে ওয়ার্ক পারমিটের সমস্ত প্রক্রিয়া এবং এয়ার টিকেট সহ আপনার মোট খরচ হবে সাত থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা।

এখন যদি আপনারা প্রশ্ন করেন এত টাকা খরচ করে আলবেনিয়াতে যাওয়া উচিত হবে কিনা তাহলে কয়েকটি বিষয় আপনাদেরকে বলতে হয় তার মধ্যে অনেকে কিন্তু ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশে যাচ্ছে যেগুলো মিডেলিস্ট কান্ট্রি। অন্যদিকে আপনি যদি আলবেনিয়ার কথা চিন্তা করেন তাহলে আপনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভূক্ত একটি দেশে আসতে পারছেন, যদিও আলবেনিয়া সেনজেন ভুক্ত কান্ট্রি নয় তবুও আপনি যদি মিডেলিস্টের যেকোনো কান্ট্রির সাথে তুলনা করতে চান তাহলে সব দিক দিয়েই নিশ্চয়ই আলবেনিয়া এগিয়ে থাকবে। কাজের সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে বেতন এবং নাগরিকত্বের কথা বিবেচনায় ও অবশ্যই যে কেউ আলবেনিয়াকে এগিয়ে রাখবেন। 

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত হওয়ায় সেখানে আপনি এক্সট্রা কিছু সুযোগ সুবিধা পাবেন যেটি কখনোই এশিয়ার কোন দেশে পাবেন না। তাই যদি আপনি পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ করে এশিয়ার কোন দেশে না গিয়ে আলবেনিয়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে অবশ্যই আপনি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। 

আলবেনিয়ার ভিসা পেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

আলবিনিয়াতে ভিসার জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় যেমন পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, আপনার যদি কোন কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সেটার সার্টিফিকেট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি কাগজপত্র লাগে। আর যাদের কাজের দক্ষতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই তারা সাধারণ শ্রমিক হিসেবে আবেদন করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে কনস্ট্রাকশন শ্রমিক বা হোটেল রিলেটেড যে সাধারণ কাজ গুলো রয়েছে সেগুলোর জন্য আবেদন করতে হবে।

শেষ কথা

এশিয়ান কোন কান্ট্রির চেয়ে নিঃসন্দেহে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত কোন কান্ট্রি আপনার জন্য বেটার অপশন হবে। এক্ষেত্রে আললবেনিয়ার আরো একটি বড় সুবিধা হল ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর যদি আপনার সেই কোম্পানি ভালো না লাগে বা কাজ করতে অসুবিধা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি অন্যান্য কোম্পানিতেও কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই সুযোগটা কিন্তু আপনি কোন এশিয়ান কান্ট্রিতে পাবেন না, এশিয়ান কান্ট্রি গুলোতে আপনি সাধারণত কোম্পানিতে কাজের চুক্তি করে বাংলাদেশ থেকে যাবেন আপনাকে সেখানে কাজ করতে হবে যতই অসুবিধা হোক না কেন। তাই আপনি যদি আলবেনিয়া তোমার পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার আশপাশে খোঁজখবর নিয়ে ভালো এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে ভিসার জন্য এপ্লাই করতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url