ভিয়েতনাম কাজের ভিসার বেতন ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ভিয়েতনাম কাজের ভিসার বেতন ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ভিয়েতনাম কাজের ভিসার বেতন ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

বাংলাদেশ থেকে কর্মীরা গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করছে ভিয়েতনামে। যদিও ভিয়েতনাম বাংলাদেশিদের জন্য প্রচলিত শ্রম বাজার নয়, কারণ ভিয়েতনাম বাংলাদেশে সরাসরি কোনো ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা দেয় না। বাংলাদেশ থেকে অনেকে টুরিস্ট ভিসায় ভিয়েতনাম গিয়ে সেখানে কোম্পানি তে ঢুকে তাদের মাধ্যমে ভিসা করে নেয়। আজকে আমরা জানবো বাংলাদেশিরা ভিয়েতনামে গিয়ে কি ধরণের কাজ করে এবং তাদের বেতন কত হয় সে সম্পর্কে। 

ভিয়েতনাম কাজের ভিসা বেতন কত?

প্রথমেই বলে রাখি ভিয়েতনামের কোম্পানি গুলো শুধুমাত্র থাকার যায়গা দেয় শ্রমিকদের, খাবার খরচ সহ অন্যান্য যত খরচ আছে তার সবটাই নিজেকে বহন করতে হয়, তবে ভালো ব্যাপার হলো ভিয়েতনামে থাকা-খাওয়া খরচ আমাদের ঢাকার চেয়ে অনেকটাই কম। 

ফার্নিচার কোম্পানি তে কাজ

শত শত বাংলাদেশি রা ভিয়েতনামে গিয়ে ফার্নিচার কোপমানি তে কাজ করছে। সেখানে অনেক বড় বড় অটমেটিক ফার্নিচার ফ্যাক্টরি রয়েছে যেগুলো বাংলাদেশের অটোবি, হাতিল এগুলোর চাইতেও বড়। সেখানে প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা কাজের বিনিময়ে মাসে ৪০০-৫০০ ডলার বেতন দেয়া হয়। ভিয়েতনামের স্থানীয় মুদ্রার নাম ভিয়েতনামি ডং, এর মান অনেক কম। তবে আপনি বাঙ্গলাদেশি টাকায় ৪৮-৬০ হাজার টাকার মতো বেতন হবে। 

জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি 

ফার্নিচার কোম্পানির পরেই ভিয়েতনামে উল্লেখযোগ্য হারে রয়েছে জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি। এখানে যারা দক্ষ শ্রমিক রয়েছেন তারাই কাজ পেয়ে থাকেন এদের বেতন ও ৫০-৬০ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে। 

শিক্ষকতা পেশা

ভিয়েতনামে সবচেয়ে সহজ ভাবে পাওয়া যায় ইংলিশে শিক্ষকতা পেশা। অর্থাৎ আপনার যদি শিক্ষগত যোগ্যতা থাকে আর যদি আপনি ইংলিশে দক্ষ হন তবে আপনি অনায়াসে সেখানে গিয়ে ইংলিশে শিক্ষকতা করতে পারবেন। এই কাজ খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং বেতন ও বেশ ভালো, ৪০০-৫০০ ডলারের মধ্যে হয়ে থাকে স্কুল বা প্রতিষ্টান ভেদে। 

জুতার শোরুমে কাজ

যারা একটু স্মার্টলি কাজ করতে চান তাদের জন্য রয়েছে জুতার শোরুম গুলাতে কাজ। সেখানে আন্তর্জাতিক অনেক ব্র্যান্ড রয়েছে  যেমন পুমা,নাইকি ইত্যাদি শোরুম গুলাতে সেলস ম্যান হিসেবে কাজ করতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ইংলিশে কথা বলতে পারতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো ভিয়েতনামে এতো লোক থাকতে আপনাকে কেনো এই কাজ দেবে তারা? উত্তর খুবই সহজ, আপনি ফরেইনার দের সাথে ইংলিশে কমিউনিকেশন করতে পারছেন এটাই কাজ দেয়ার অন্যতম কারণ। তবে এই কাজের বেতন একটু কম ২০০-৩০০ ডলার মতো বেতন পাবেন যা বাংলাদেশি টাকায় ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা মতো। 

আবার যারা জুতার ফ্যক্টরিতে কাজ করবেন ত্যাদের বেতন ৪০০-৫০০ ডলারের মতো হবে। তবে এটা কোনো সাধারন ফ্যাক্টরি নয়, পুমা,নাইকি যে কত বড় ব্র্যান্ড তা আমরা সবাই কম বেশি জানি। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ভিয়েতনামের জুতার মান অনেক ভালো এবং তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের জুতা বিক্রি করে থাকে সুতরাং এখানে আপনি অনায়াসে কাজ করতে পারেন। 

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি তে কাজ

ভিয়েতনামে সবচেয়ে বেশি কাজ গার্মেন্টস কোম্পানিতেই হয়ে থাকে। শীতপ্রধান দেশ হবার কারনে সেখানে গার্মেন্টস পন্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনার যদি গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করার ইচ্ছা থাকে বা দক্ষতা থাকে তবে আপনি ভিয়েতনামে গার্মেন্টস ভিসায় যেতে পারেন। এই কাজের বেতন ও গড়ে বাংলাদেশি টাকায় ৫০-৬০ হাজার মতো হয়ে থাকে। 

সব শেষে বলা যায় ভিয়েতনামে গিয়ে আপনি অনায়াসে চাইলেই ৪০০-৫০০ ডলার বেতনের কাজ করতে পারবেন। 

ভিয়েতনাম ভিসা প্রসেসিং

ভিয়েতনামে যদি আপনি সরাসরি কাজের ভিসা পেতে চান তবে সেখানকার কোম্পানি থেকে ইনভাইটেশন লেটারের প্রয়োজন হয়। তবে বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে মাত্র ২-৫% মানুষ সরাসরি কাজের ভিষায় যাচ্ছে বাকিরা সবাই টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে তারপর ওখান থেকে কাজের ভিসা করে নিচ্ছে।

ভিয়েতনামের ভিসা পেতে যে যে কাগজপত্র লাগবে
  • মূল পাসপোর্ট 
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • মেডিক্যাল রিপোর্ট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের দরকার নেই
ভিসা প্রসেসিং এ সর্বমোট ২ মাস মতো সময় লাগবে এটা একদম ফ্লাইট অবদি সময়। তবে টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই কাজ কমপ্লিট হয়ে যায়। 

ভিয়েতনাম ভিসা খরচ 

ভিয়েতনামে যেহেতু অনেকেই টুরিস্ট ভিসায় যাচ্ছে তাই আগে টুরিস্ট ভিসার খরচ কেমন তা জানা যাক। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার চাইতে টুরিস্ট ভিসায় খরচ কম, বর্তমানে ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো লাগবে। আর যারা সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কনট্রাক্ট করে যাচ্ছে তাদের ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ৪ লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। 

শেষ কথা

যেকোনো ভিসায় এপ্লাই করার আগে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন। প্রয়োজনীয় তথ্যগুলা আগে সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই বাছাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন। কাজের ভিসার ক্ষেত্রে কোম্পানির ইনভাইটেশন লেটার এবং কাজের বিস্তারিত বিষয় গুলা বুঝে শুনে এরপর ভিসার জন্য এপ্লাই করবেন। সম্ভব হলে সরকারি মাধ্যমে ভিসার জন্য এপ্লাই করবেন, এজেন্টের মাধ্যমে এপ্লাই করতে হলে অবশ্যই তাদের সম্পর্কে আগে ভালো করে খোজ খবর নিবেন এরপর যোগাযোগ করবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url