হাঙ্গেরি তে বেতন কত? ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত

হাঙ্গেরি তে বেতন কত? ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত

হাঙ্গেরি তে বেতন কত? ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত

ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত যেসকল দেশের ভিসা বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে হচ্ছে তার মধ্যে সব থেকে সহজে এবং দ্রুততম সময়ে পাওয়া যাচ্ছে হাঙ্গেরির ভিসা। এখন প্রশ্ন হলো হাঙ্গেরি তে গিয়ে আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন বা হাঙ্গেরি তে কোন কাজের বেতন কত টাকা হবে? আমরা সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোর নিয়ম সম্পর্কে অবগত। আমরা প্রায় সবাই জানি সেনজেন ভুক্ত দেশে একবার ঢুকতে পারলে নিজের ইচ্ছা স্বাধীনভাবে কাজ খুঁজে নিয়ে কাজ করা যায়। তাই এক কথায় সুস্পষ্ট ভাবে বেতন কত হবে সেটা বলা কঠিন আমরা তিনটা ক্যাটাগরিতে কত টাকা উপার্জন করতে পারবেন সে সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো।

হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট

প্রথমত বাংলাদেশ থেকে আপনি কোন ক্যাটাগরিতে বা কোন কোম্পানির কাজ নিয়ে হাঙ্গেরি যাচ্ছেন সেই কোম্পানির বেতন কত টাকা হতে পারে, দ্বিতীয়ত হাঙ্গেরি তে যাওয়ার পর আপনি যদি সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজের মতো করে কাজ খুঁজে নিতে চান তাহলে বেতন কত টাকা হতে পারে এবং তৃতীয়ত সবথেকে বেশি বেতনের কাজ কি এবং কত টাকা বেতন পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে আলোচনা করবো।

যেহেতু আমরা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশ হাঙ্গেরি তে যাবো তাই প্রাথমিক অবস্থায় অবশ্যই আমাদের একটি কোম্পানি নির্বাচন করে সেই কোম্পানির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট করে যেতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশ থেকে যেসব কোম্পানি লোক নিচ্ছে এসব কোম্পানি ৭০০-১০০০ ইউরো সমপরিমাণ বেতন অফার করছে। দেশটির প্রচলিত মুদ্রার নাম ফোরিন্ট, এর মান অনেক কম কিন্ত আমরা জানি আন্তর্জাতিক শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেতনের যে চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয় সেখানে বেতনের ব্যাপার টা ইউরো বা ডলারে বলা হয় তাই আমরা ইউরো হিসেবে বেতন ধরে নিবো।

বাংলাদেশ থেকে যেসকল কোম্পানি তে আপনার এজেন্সি  আপনাকে পাঠাবে এসকল কোম্পানির বেতন ৯১ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে হবে। এর সাথে কোম্পানি আপনাকে থাকার যায়গা বিনামূল্যে দেবে, কিছু কিছু কোম্পানি আছে যারা খাবারের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দেবে আবার কিছু কোম্পানি আছে থাকা-খাওয়া কোনোটাই দিবে না এটা নির্ভর করবে আপনার এজেন্সি আপনাকে কোন ধরনের কোম্পানিতে পাঠাচ্ছে তার ওপর।

ওয়ার্ক পারমিটের নিশ্চয়তা এবং ভিসার নিশ্চয়তা পেতে অবশ্যই বড় কোনো কোম্পানির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট প্রোসেস করতে হয় এতে করে ওয়ার্ক পারমিট পাবার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় এবং ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা ও অনেক বেশি থাকে ৷ 

নিজে কাজ খুঁজে নিলে বেতন কত হবে? 

আমরা জানি হাঙ্গেরি ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশ সেখানে যাওয়ার পরে আপনি যদি আপনার এজেন্সির ঠিক করে দেয়া কোম্পানি তে কাজ নাও করেন, নিজে নিজে কাজ খুঁজে নিতে পারেন। হাঙ্গেরি তে আপনি আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনো প্রকার কাজ খুঁজে নিতে পারেন, সাধারণত ফ্যাক্টরি গুলাতে বেতন ৮০০ থেকে ১২০০ ইউরোর মধ্যে যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার মতো হবে। মনে রাখতে হবে সকল কাজে বাংলাদেশ থেকে কর্মি নেওয়া হচ্ছে না কিন্তু আপনি যেকোনো কোম্পানির মাধ্যমে হাঙ্গেরি তে পৌঁছে এরপর নিজে আপনার পছন্দ মতো কাজ খুঁজে নিতে পারবেন পরে সেক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না।

হাঙ্গেরি তে কত সময় কাজ করতে হবে?

এখানে কোম্পানি তে কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে দিনে ৮ ঘন্টা এবং সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা অর্থাৎ ৫ দিন কাজ করতে হবে ৷ এত সময় কাজ করার জন্য প্রতি মাসে যে বেতনটি পাবেন সেটি আলোচনা করেছি আগেই, আবার যারা রেস্টুরেন্টে কাজ খুঁজে নিবেন তাদের বেতন হবে ৬০০-৭০০ ইউরো সর্বৌচ্চ৷ 

হাঙ্গেরি তে কোন কাজের বেতন সবচেয়ে বেশি ?

হাঙ্গেরি তে যাবার পর যদি আপনি খাবার ডেলিভারি করার কাজ পান তাহলে সবথেকে বেশি টাকা কামাই করতে পারবেন। আমরা জানি প্রতিটা দেশেই এই খাবার ডেলিভারির কাজ পর্যাপ্ত থাকে এই কাজ খুঁজে পেতে আপনার খুব বেশি সমস্যা হবে না কিন্তু এই কাজ করলে প্রতি মাসে আপনি ১ হাজার থেকে ১৫০০ ইউরো সমপরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফুড ডেলিভারি কাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই আপনি চাইলে সপ্তাহে  ৭ দিনই কাজ করতে পারবেন। এটি অনেকটাই ফ্রিলান্সিং কাজের মতো  প্রতিটি ডেলিভারির জন্য আপনি টাকা পাবেন এখন কত ঘন্টা কাজ করবেন কত টাকা আয় করবেন সম্পূর্ণটাই নির্ভর করবে আপনার ওপরে।
 
তবে একটা দুঃখের ব্যাপার হলো এই দেশে আপনি যা আয় করবেন তার ওপর ৩০% ট্যাক্স দিতে হবে ওই দেশের সরকার কে।  এটি কোম্পানি আপনার জন্য দেবে না আপনার ট্যাক্স আপনাকেই পরিশোধ করতে হবে আপনার বেতন থেকে ৷ আপনি যে কাজই করেন বা যেভাবেই উপার্জন করেন তার ওপর ৩০% ট্যাক্স দিতেই হবে অর্থাৎ আপনার ১ লক্ষ টাকা ইনকামের মধ্যে থেকে ৩০ হাজার টাকা সরকার কে দিয়ে দিতে হবে।

হাঙ্গেরি কেমন দেশ?

হাঙ্গেরি একটি ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশ এবং সেনজেন ভুক্ত ও বটে। আপনি যদি হাঙ্গেরি তে নাগরিকত্ব পান তবে ইউরোপের যে অন্যান্য দেশগুলি রয়েছে সেখানে আপনি কোনো প্রকার ভিসা ছাড়াই ঢুকতে পারবেন এবং চলাফেরা করতে পারবেন। কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী এই দেশটি কাজের সুবিধার পাশাপাশি সৌন্দর্যের দিক দিয়েও সেরা। এক কথায় বলতে গেলে আপনি যদি একজন অভিবাসন প্রত্যাশি হয়ে থাকেন আর আপনার চিন্তা যদি হয় ইউরোপের কোনো দেশে কাজ করা তাহলে আপনি হাঙ্গেরির কথা বিবেচনায় নিতেই পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url