ইউরোপের কোন কোন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ

ইউরোপের কোন কোন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ?

ইউরোপের কোন কোন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ?

আসসালামু আলাইকুম, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বড় একটি অংশ চিন্তা করছেন যে বাংলাদেশে থাকবেন না তারা বাইরের কোন কান্ট্রি বিশেষ করে ইউরোপ মহাদেশের কোন কান্ট্রিতে সেট হতে চাচ্ছেন কারণ ইউরোপের নাগরিকত্ব পাওয়া মানে আপনি ইউরোপের অন্যান্য ২৭ টি দেশে অনায়াসে চলাফেরা করতে পারছেন এমনকি বিশ্বের 150 টির বেশি দেশে আপনি কোন প্রকার ভিসা ছাড়াই চলাফেরা করতে পারবেন।

তবে চলুন জেনে নেয়া যাক ইউরোপের কোন দেশগুলো তে আপনি চাইলে খুব সহজেই নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

পর্তুগাল

আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন যে ইউরোপের কোন দেশে সেটেল হওয়া সবচেয়ে সহজ সেক্ষেত্রে আমি প্রথমেই বলবো পর্তুগাল এর কথা। কারন পর্তুগাল এমন একটি দেশ যে দেশে আপনি যদি বৈধভাবে আসেন একবার এমনকি অবৈধ ভাবেই আসেন তবুও এই দেশটিতে পরবর্তী তে আপনার সেটেল হওয়ার বা নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তো আমি বৈধ পথেই বলি, বৈধ পথে আপনি যদি আসেন তাহলে আপনি মাত্র ৩ মাসের মধ্যে  অস্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পাবেন এরপর আপনার স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে সর্বৌচ্চ সময় লাগবে ৫ বছর। এই দেশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো কোনো রেস্ট্রিকশন নাই যে আপনাকে পার্মানেন্টলি এই দেশেই থাকতে হবে, অর্থাৎ নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আপনি বছরে মাত্র ২ সপ্তাহ ও যদি এই দেশে থাকেন তাহলেই হবে এবং এতেই আপনার নাগরিকত্ব টিকে থাকবে।

মাল্টা

মাল্টার ক্ষেত্রেও নাগরিকত্ব পাওয়া খুবই সহজ এবং সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো বিনিয়োগের মাধ্যমে। দেশটিতে আপনি যদি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজে দেশটিতে নাগরিকত্ব পাবেন এবং স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে পারবেন। আর সেক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়ার জন্য আপনার ১২ থেকে ৩৬ মাস সময় লাগবে আর খরচ করতে হবে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাস এতটুকু তেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন ইউরোপীয় দেশ মাল্টার নাগরিকত্ব। 

সুইডেন

অভিবাসী দের জন্য খুবই উদার একটি দেশ হলো সুইডেন, আপনি স্টুডেন্ট হিসেবে যেতে পারেন,ওয়ার্কার হিসেবে যেতে পারেন যেভাবেই যান না কেনো আপনি যদি বৈধ ভাবে যেয়ে থাকেন এবং আপনি মাত্র ৫ বছর যদি ওই দেশটিতে বসবাস করতে পারেন তাহলেই ৫ বছর পর আপনি সুইডেনের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। এমনকি এখনো অবদি দেশটি এমন কোনো রেস্ট্রিকশন দেয় নি যে আপনাকে ওই দেশের ভাষা শিখতেই হবে। আর যারা বেশি ব্যস্ত অথবা যারা চান আমি আরো অল্প সময়ের মধ্যে সুইডেনের নাগরিকত্ব পাবো তাহলে সুইডিস কোনো নাগরিক কে বিয়ে করে নিতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনি মাত্র ২ বছরের মধ্যে আপনি সুডেনের নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

ফ্রান্স

ফ্রান্স এমন একটি দেশ যেখানে সবচচেয়ে বেশি মানুষ ফ্রান্সে পলিটিক্যাল এসাইলাম বা অন্য যেকোনো ইস্যুতে  এসাইলাম নিয়ে থাকে তবে এই দেশটি তে কিন্তু সেটেল হওয়া অনেক সহজ কারন আপনি যদি টানা ৫ বছর দেশটিতে থাকেন তাহলেই আপনি সেখানকার নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে স্টুডেন্ট দের জন্য সেখানকার নাগরিকত্ব পাওয়া আরো সহজ কারন কোনো স্টুডেন্ট যদি ফরাসি ভাষায় স্নাতক বা স্নাতোকোত্বর ডিগ্রি লাভ করে তাহলে তারা কিন্তু চাইলে দুই বছর পরই নাগরিকত্বের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। নাগরিকত্ব পেতে হলে তাদের যে ফরাসি ইতিহাস এবং ভাষাগত জ্ঞান আছে সেগুলো অর্জন করতে হবে এবং তাদের কাছে প্রমান করতে হবে।

নরওয়ে

২০১৫ সালের পর থেকে দেশটি অভিবাসীদের জন্য আরো বেশি উদার হয়েছে, সেখানে দ্বৈত নাগরিকত্বের যে বিষয় সেটি চালু করা হয়েছে সেই সুযোগ টি কিন্তু বাংলাদেশীরা ও নিতে পারেন। আপনি যদি নরওয়ে তে যেয়ে থাকেন স্টুডেন্ট হিসেবে বা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে অথবা অন্য কোন ভিষায় এবং আপনি যদি আপনার ওয়ার্ক পারমিট বা স্টুডেন্টশিপ আরো বাড়াতে পারেন বৈধভাবে এভাবে করে যদি আপনি নরওয়ে তে ৭ বছর থাকেন তাহলে আপনি নাগরিকত্ব পেতে পারেন সাত বছর পরে। এক্ষেত্রে নরওয়ে পুলিশের তরফ থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দরকার হয় অর্থাৎ আপনি বিগত সাত বছরে কোন ক্রাইম বা আইনগত ঝামেলার সাথে যুক্ত নয় সেটির প্রমাণ হিসেবে এই সার্টিফিকেট দরকার হয়। শুধুমাত্র এই একটি রিকোয়ারমেন্ট যদি আপনি ফুলফিল করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই নরওয়েতে নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

নেদারল্যান্ডস

আসাধারণ কর্মমুখর এবং চাঞ্চল্যকর একটি দেশ হলো নেদারল্যান্ড। আপনি চাইলে এই দেশটিতে ও সেটেল হতে পারেন তবে এই দেশটিতে স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি ভিসায় যেয়ে সেখানে সেটেল হতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে কিছু শর্ত আছে যেমনঃ আপনাকে এই দেশটিতে অন্তত পাঁচ বছর থাকতেই হবে এরপরই শুধুমাত্র নাগরিকত্বের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। নেদারল্যান্ড এ নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে রেস্ট্রিকশন রয়েছে সেগুলো হলো, আপনি এখানে দ্বৈত নাগরিকত্ব পাবেন না এক্ষেত্রে আপনি যদি সেখানকার নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে। এবং দ্বিতীয়ত হল নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আপনাকে একটি পরীক্ষা দিতে হবে সেখানে তাদের দেশের ভাষা, ঐতিহ্য সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে।

যুক্তরাজ্য বা লন্ডন

সর্বশেষ যে দেশটি নিয়ে কথা বলব সেটি হল যুক্তরাজ্য বা লন্ডন। এই দেশটি বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি স্বপ্নের দেশ বটে। দেশটিতে আপনি যদি সেটেল হতে চান তাহলে অফিশিয়ালি বলা হয়ে থাকে সেখানে পাঁচ বছর সেখানে বসবাস করতে হবে কিন্তু আনঅফিসিয়ালি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে অন্তত দশ বছর থাকতে হবে। কারণ বর্তমানে লন্ডনে সাউথ এশিয়ার বিভিন্ন কান্ট্রি যেমন বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান ইত্যাদি দেশ থেকে এত পরিমান মানুষ সেখানে নাগরিকত্বের জন্য এপ্লাই করে থাকে যার জন্য পাঁচ বছরে নাগরিকত্ব পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

যেকোনো ভিসায় লন্ডনে যেতে হলে বা সেখানকার অধিবাসী হতে গেলে আপনাকে অনেক আইনি কাগজপত্র জমা দিতে হয় এবং সবচেয়ে ঝামেলার ব্যাপার হলো ব্রিটিশ ল মাঝেমধ্যেই চেঞ্জ হয় কিন্তু তারপরেও অফিসিয়ালি পাঁচ বছর পর আপনি সেখানে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করবেন।

যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব পাবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো সেখানে যুক্তরাজ্যের জীবন এমন শিরোনামে আপনাকে একটি পরীক্ষা দিতে হবে এবং এই পরীক্ষায় আপনাকে অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে তাহলে আপনি যত বছরই সেখানে থাকেন না কেন আপনি সেখানকার নাগরিকত্ব পাবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url